Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sundarbans

Sundarbans: রোজগার দিনে ৪০-৫০ টাকা, দিশাহারা গাইডরা

সুন্দরবন এলাকার শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান খুলে দিতে তাঁদের গাইড হিসেবে নিয়োগ করেছিল বন দফতর।

ফাইল চিত্র।

প্রসেনজিৎ সাহা
সুন্দরবন  শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২২ ০৮:১৪
Share: Save:

ওঁদের কাজ মানুষজনকে পথ দেখানো। কিন্তু তাঁরাই এখন কোন পথে চলবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না!

সুন্দরবনের গাইডদের ইদানীং অবস্থা কিছুটা এমনই। শিক্ষিত বেকার যুবকেরা রীতিমতো ইন্টারভিউ দিয়ে এই পেশায় ঢুকেছিলেন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায়। কিন্তু বছরভর পর্যটকদের অভাবে যথেষ্ট সঙ্কটে তাঁদের পেশা। কোনও দিন ৪০-৫০ টাকা রোজগার হচ্ছে। কোনওদিন তা-ও হচ্ছে না বলে অভিযোগ সুন্দরবনের গাইডদের। অনেকেই এই পেশায় হতাশ হয়ে পড়ছেন। বিকল্প পেশার খোঁজও চালাচ্ছেন কেউ কেউ।

সুন্দরবন এলাকার শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান খুলে দিতে তাঁদের গাইড হিসেবে নিয়োগ করেছিল বন দফতর। জঙ্গল-লাগোয়া গ্রামগুলিতে যে যৌথ বন পরিচালন কমিটি রয়েছে, সেই কমিটির সদস্য বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ৬২ জন গাইড রয়েছেন। বন দফতরের তরফে এঁদের আলাদা করে কোনও ভাতা বা সাম্মানিক দেওয়া হয় না। যে সমস্ত দেশিয় পর্যটক দল সুন্দরবনে ঘুরতে আসেন, তাঁদের কাছ থেকে গ্রুপ-পিছু ৬০০ টাকা এবং বিদেশি পর্যটক দলের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা করে গাইডদের বরাদ্দ বাবদ আদায় করে বন দফতর। সেই টাকাই দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু অক্টোবর থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটন মরসুমে অধিকাংশ দিন কাজ পেলেও বছরের বাকি ৮ মাস সে ভাবে কাজ থাকে না। প্রতিদিন গাইডদের বেশিরভাগই উপস্থিত থাকেন পর্যটকদের অনুমতি কেন্দ্রে। একটি-দু’টি দল এলে যা উপার্জন হয়, সেই টাকা সেদিন উপস্থিত গাইডরা নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে নেন। এতে এক একজনের ৪০-৫০ টাকা করে দৈনিক আয় হয়। কোনওদিন তা-ও হয় না। গাইড তাপস খাটুয়া, মৃণালকান্তি মণ্ডলরা জানালেন, যত দিন যাচ্ছে, অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। একদিকে বাজার অগ্নিমূল্য। কিন্তু রোজগার তলানিতে ঠেকেছে। বন দফতর বা সরকারকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। করোনা সংক্রমণের জেরে টানা লকডাউন ও দীর্ঘদিন সুন্দরবনের পর্যটন বন্ধ ছিল। সে সময়েও যথেষ্ট সমস্যায় দিন কাটাতে হয়েছে গাইড ও তাঁদের পরিবারকে।

গাইডদের সংগঠন সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ক্যাজ়ুয়াল এমপ্লয়ি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক হিমাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা সকলেই শিক্ষিত। কেউ কেউ এমএ, বিএ পাস। এই পেশায় এসেছিলাম জঙ্গল ও বন্যপ্রাণকে ভালবেসে। কিন্তু অফ সিজনে আমাদের রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে আমাদের জন্য বিকল্প কিছু না ভাবলে অনেকেই এই পেশা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবেন।’’

আশার বাণী কিছু শোনাতে পারেনি বন দফতর। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, ‘‘সব পর্যটন কেন্দ্রেই এই সমস্যা আছে। বছরের একটা সময়ে পিক সিজন থাকবে, একটা সময়ে অফ সিজন থাকবে। এখন সুন্দরবনে অফ সিজন চলছে বলে ওঁদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বিকল্প কিছু পেশার ব্যবস্থা যদি করা যায়, সেই ভাবনা-চিন্তা চলছে। তবে এখনও সঠিক ভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sundarbans Tour Guide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy