ফের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় সুন্দরবন। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণিমার কটালের জেরে বিপর্যয়ের পর সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় নিম্নচাপের ভ্রূকুটি। যার কারণে রবিবার থেকে ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের। ফের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে ওই এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দাকে। সেই সঙ্গে ত্রাণকাজের যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েও প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সপ্তাহান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলেছে নবান্ন। বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়েও মহকুমা শাসকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক সেরেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন। ইতিমধ্যে সুন্দরবন উপকূল এবং জেলার নদী তীরবর্তী বিপদসঙ্কুল এলাকা থেকে হাজার হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা এবং ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্যবন্দর এলাকায় মাইকের মাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে মৎস্য দফতর। পাশাপাশি, মৎস্যজীবী সংগঠনগুলিকেও সতর্ক করা হচ্ছে। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জেলার সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্ত প্রধান বলেন, ‘‘সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলিকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। শনিবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে।’’
বিপর্যয়ের আশঙ্কায় সুন্দরবন ও উপকূলবর্তী এলাকায় সিভিল ডিফেন্স এবং এনডিআরএফ-এর টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সুন্দরবন-সহ রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় সমুদ্র ও আকাশপথে নজরদারি চালাচ্ছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। মৎস্যজীবীরা যাতে নিরাপদে ফিরে আসতে পারেন, সে জন্য সাহায্যও করা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আগাম প্রস্তুতিও সেরে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি সেচ, পূর্ত এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপকূল ও সুন্দরবনের ফ্লাড সেন্টারগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। একাধিক অস্থায়ী রন্ধনশালা চালু করা ছাড়াও জেলার প্রতিটি ব্লক অফিস ও পঞ্চায়েতে পর্যাপ্ত ত্রিপল, শুকনো খাবার এবং পানীয় জলের প্যাকেট মজুত রাখতে বলা হয়েছে। হাসপাতাল এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে বলেছে প্রশাসন। মহকুমা প্রশাসনের দফতরে জরুরি ভিত্তিতে একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। আলিপুরে জেলাশাসকের দফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে জেলার পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘বিপর্যয়ের মোকাবিলায় সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নদী তীরবর্তী বিপদসঙ্কুল এলাকা থেকে প্রায় সব মানুষকেই ফ্লাড সেন্টারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগই প্রস্তুত।’’
প্রসঙ্গত, ইয়াসের পর জেলা জুড়ে বহু নদী ও সমুদ্রবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ধাপে ধাপে সেগুলি মেরামত করা হলেও টানা কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বহু মাটির বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে মাটির বাড়িও। শনিবারের মধ্যে বেহাল বাঁধগুলি মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy