লেন্সবন্দি: অশেষের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই সব ছবি, ইনসেটে, এসড়িপিও নিজে
‘কড়া অফিসার’ হিসেবে পরিচিত তিনি। শখ বলতে, গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে বন-জঙ্গল, পাহাড়-সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানো। তিনি বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার।
বছর পঞ্চান্নের অশেষবিক্রম ছবি তোলার নেশায় বাইক নিয়ে নানা দিকে ছুটে যান। তাঁর ছবির বিষয়বস্তু মূলত পশুপাখি। প্রায় পাঁচশো প্রজাতির পাখির ছবি ইতিমধ্যেই ক্যামেরাবন্দি করেছেন বলে জানালেন। শুধু আফসোস, সুন্দরবনে কুমিরের ছবি তুললেও বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়েও বাঘের ছবি তুলতে পারেননি।
সম্প্রতি তাঁর কাছে খবর আসে, বেথুয়াডহরিতে ইন্ডিয়ান পিট্টারের দেখা মিলেছে। বনগাঁ থেকে বেথুয়াডহরি প্রায় ১০০ কিলোমিটার। রাত ৩টের সময়ে বনগাঁ থেকে বাইক নিয়ে বেরিয়ে সেই দূরত্ব উজিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন ‘স্পটে’। কিন্তু গেলেই তো আর পাখির দেখা মেলেনি! প্রথমবার ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছিলেন অশেষ। তবে হাল ছাড়ার পাত্র নন। পাখিটির খোঁজে তিনবার বেথুয়াডহরি যান। অবশেষে ইন্ডিয়ান পিট্টারের ছবি তুলতে পেরেছেন।
সোমবার ছিল বিশ্ব ফোটোগ্রাফি দিবস। সেই উপলক্ষে অশেষ স্থানীয় যুবকদের ছবি তোলায় উৎসাহ দিচ্ছেন। সঙ্গে করে তাঁদের নিয়েও যাচ্ছেন ছবি তুলতে। তাঁর সংগ্রহে থাকা পশুপাখির ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করবেন বলে জানালেন। স্কুলে গিয়ে ওই সব ছবি দেখিয়ে পড়ুয়াদের পশুপাখি চেনানোর কর্মসূচিও নিয়েছেন এসডিপিও।
ছবি তোলার নেশা কী ভাবে শুরু হয়েছিল?
অশেষ জানান, স্কুলজীবন থেকেই এর শুরু। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে প্রথম ভাল ক্যামেরা হাতে পান। কিন্তু পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পরে ছবি তোলার নেশা বেশি করে পেয়ে বসে। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পরেই প্রকৃতিকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ বেশি পাই। তখন থেকে প্রকৃতির ছবি তোলার আগ্রহও বাড়ল।’’
ছবি তোলার ব্যাপারে সহকর্মীদেরও উৎসাহ দেন অশেষ। তাঁর আগ্রহে অনেক পুলিশকর্মীই ছবি তুলতে শুরু করেছেন। তাঁদেরই একজন পাথরপ্রতিমা থানার ওসি সলিলকুমার মণ্ডল। সলিল বলেন, ‘‘উনি এসডিপিও হিসেবে কাকদ্বীপে ছিলেন। তখন আমাকে ছবি তোলার ব্যাপারে আগ্রহী করেন। তারপরে ক্যামেরা কিনি। এখন তো নিয়মিত ছবি তুলি।’’
পশুপাখি শিকারের বিরুদ্ধে অশেষ কড়া পদক্ষেপ করেন। দিন কয়েক আগে তিনি কালিয়ানি গ্রামে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর নজরে আসে, কয়েক জন বক মেরে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তাড়া করে পাখি শিকারিদের ধরেন। মরা বক উদ্ধার করেন। পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও করা হয়েছিল।
অশেষের স্বপ্ন কী?
তাঁর কথায়, ‘‘ইচ্ছা আছে, সময়-সুযোগ পেলে দক্ষিণ আফ্রিকা, নরওয়ে গিয়ে সেখানকার পশুপাখির ছবি তুলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy