বারুইপুরের উত্তর খোদার বাজারের মণ্ডলপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে দু’দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। গ্রেফতার করা হয় মোকলেসুর শেখ এবং তার শাশুড়ি সেরিনা বিবিকে। তাদের জেরা করে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা। এ বার ধৃত দু’জনের বিরুদ্ধে আর্থিক তদন্ত করবে এসটিএফ।
সূত্রের খবর, আর্থিক তদন্ত করা মানে ধৃতদের যা যা সম্পত্তি রয়েছে, প্রথমে তার তালিকা তৈরি করা হবে। পরে তার আর্থিক মূল্যায়ন করা হবে। এর পরে সেই সব সম্পত্তি মাদক বেচে তৈরি কিনা, তা খতিয়ে দেখে আইনত ভাবে সম্পতি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। এক তদন্তকারী জানান, শুক্রবার পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও তাঁরা চান, মোকলেসুরের বিরুদ্ধে আর্থিক তদন্ত করে, মাদক কারবার চালিয়ে তৈরি করা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে। সেই লক্ষ্যেই শীর্ষ কর্তাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে বারুইপুর থানার পুলিশকে নিয়ে মণ্ডলপাড়ার একটি চারতলা বাড়ির একতলায় হানা দেয় এসটিএফের বাহিনী। সেখান থেকে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের হেরোইন উদ্ধার হয়। বাজেয়াপ্ত হয় প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা। গ্রেফতার হয় ওই দু’জন। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে, মোকলেসুর তার স্ত্রী, শাশুড়ি ছাড়াও পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে ওই কারবার চালাত। নদিয়ার পলাশি এবং মুর্শিদাবাদের লালগোলার একাধিক মাদক তৈরির কারখানা থেকে কোটি কোটি টাকার মাদক নিয়ে আসত সে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মোকলেসুরকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। উস্তি থানায় ওই মাদকের মামলা হয়। মামলার তদন্তভার ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার হাতে। অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতিতেই সেই মামলায় জামিন পেয়ে ফের মাদকের কারবার শুরু করে মোকলেসুর। এক পুলিশকর্তা জানান, জেরায় মোকলেসুরের দাবি, সে বার একটি চক্র তাকে জামিন পেতে সাহায্য করেছিল। তাতে কোনও পুলিশকর্মী জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানান। কোনও পুলিশকর্মীর গাফিলতির জেরে মোকলেসুর জামিন পেয়েছিল কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)