E-Paper

২৪৭ কোটি অব্যবহৃত, দ্রুত খরচের নির্দেশ

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রায় ৩৪৭ কোটি টাকা পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। সেই টাকার পুরোটা খরচ করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।

—প্রতীকী চিত্র।

সমরেশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৪
Share
Save

উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা পড়ে। তা খরচ করতে সরকার কড়া বার্তা দিতেই উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এক মাসের মধ্যে অব্যবহৃত অর্থের ৭৫ শতাংশ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। তার জেরেই দফায় দফায় বৈঠক করছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। দিন কয়েক আগে জেলার সব বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘আর্থিক বছরের পড়ে থাকা টাকা পঞ্চায়েত দফতরের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে খরচের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য প্রতিটি মহকুমা ধরে সংশ্লিষ্ট প্রধানদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে। আবারও বৈঠক ডাকা হয়েছে কাজ কতটা হল সেই রিপোর্ট নেওয়ার জন্য।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রায় ৩৪৭ কোটি টাকা পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। সেই টাকার পুরোটা খরচ করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। তার জেরেই জেলার খাতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত মিলিয়ে জুন মাসের শেষে ২৪৭.০৮ কোটিরও বেশি টাকা পড়ে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সেই অর্থ খরচ করার জন্য গ্রামীণ প্রকল্পের টেন্ডার চূড়ান্ত করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বলা হয়েছে, ১৫ অগস্টের মধ্যে ওই অব্যবহৃত টাকা ব্যবহার করতে হবে। কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ টাকা খরচ করতেই হবে বলে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর নির্দেশ দিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি।

প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১০ জুলাই থেকে ১৩ জুলাইয়ের প্রোগ্রেস রিপোর্ট অনুযায়ী— দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে ৩১২টি পঞ্চায়েত ১৯২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬৮ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ৩৫.৪৬ শতাংশ। তার মানে হাতে রয়েছে প্রায় ১২৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ৬৩.৬২ শতাংশ। জেলার ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতিতেও ৪১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। তারা পেয়েছিল ৫৭ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। খরচ করেছে ১৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ২৮.৪৬% শতাংশ। আর জেলা পরিষদ পেয়েছিল ৯৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। এখন সেখানে পড়ে রয়েছে ৮১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। খরচ হয়েছে ১৪ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ১৫.৪৬ শতাংশ। তিনটি স্তরে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে জেলা পেয়েছিল ৩৪৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। খরচ হয়েছে ৯৯ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ২৮.৭৪ শতাংশ। পড়ে রয়েছে ২৪৭ কোটি ০৮ লক্ষ টাকা।

প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, একটি বছরে অর্থ কমিশনের মোট বরাদ্দের ৭০ শতাংশ পায় পঞ্চায়েত। ১৫ শতাংশ করে পায় পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ। মোট টাকার ৬০ শতাংশ পানীয় জল, নিকাশি ব্যবস্থা, শৌচালয়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো নির্ধারিত কিছু খাতে খরচ হয়, যাকে বলা হয় টায়েড ফান্ড। বাকি ৪০ শতাংশ খরচ হয় রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ছোট সেতু তৈরি বা মেরামত, আলোর মতো বিভিন্ন খাতে বা আনটায়েড ফান্ড হিসেবে।

জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল ৫৭ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ১ থেকে ২০ শতাংশ টাকা খরচ করেছে ৬টি পঞ্চায়েত সমিতি। খুবই খারাপ অবস্থা মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির। তারা খরচ করেছ মাত্র ৬.৯২ শতাংশ টাকা। ৩টি সমিতি ২০ থেকে ২৩ শতাংশ, ১৬টি সমিতি ২৪ থেকে ৪১শতাংশ বরাদ্দ খরচ করতে পেরেছে। ৬০ শতাংশেরও বেশি খরচ করতে পেরেছে সাগর, ফলতা, ক্যানিং ১ ও কুলতলি পঞ্চায়েত সমিতি।

গ্রাম পঞ্চায়েতেও বরাদ্দ অর্থ খরচের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে সাগর ও ফলতা ব্লক। সেখানে ৫১ শতাংশের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। সব থেকে পিছিয়ে ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লক। সেখানে খরচ হয়েছে মাত্র ১৮.৭০ শতাংশ টাকা। পিছিয়ে রয়েছে মথুরাপুর ২, মগরাহাটা ১, ঠাকুরপুকুর, মহেশতলা, কুলতলি, মথুরাপুর ১, ভাঙড় ২ ব্লকও। তবে জেলা পরিষদের সভাধিপতি নীলিমা মিস্ত্রী বিশাল বলেন, ‘‘ভোটের আগে আমরা অনেক কাজ করেছি। ঠিকাদারদের বকেয়া দেওয়া চলছে, তাই অতিরিক্ত টাকা পড়ে রয়েছে বলে দেখাছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সে সব কাজের নতুন করে টেন্ডার করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Development Fund West Bengal government

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।