বৃদ্ধাশ্রম চালাতেন তাপস মণ্ডল। — ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাপস মণ্ডলকে রবিবার গ্রেফতার করেছে সিবিআই। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি এবং রাজ্যের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপসকে রবিবার দুপুরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। ঘণ্টা তিনেক জেরা করার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
তাপস একটি বৃদ্ধাশ্রম চালান হাবড়ার বাণীপুরে ইতনা কলোনি এলাকায়। জানুয়ারি মাসে শেষ বার এসেছিলেন এখানে। বৃদ্ধাশ্রমটি পরিচালনা করে ‘মিনার্ভা এডুকেশনাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।’ জানুয়ারি মাসে তাপস বৃদ্ধাশ্রমে এসে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তিনিই ওই সোসাইটির কর্ণধার।
সোসাইটির অধীনে প্রচুর স্কুল-কলেজ চলে। পাশাপাশি, সোসাইটি সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকে। সরকারি ও বেসরকারি নানা অনুষ্ঠান করে। তাপস সে সময়ে বলেছিলেন, ‘‘আমি একটি অনাথ আশ্রমের সঙ্গে দীর্ঘ দিন জড়িয়ে আছি। চেয়েছিলাম, একটি বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথ আশ্রম তৈরি করতে। সেই মতো ২০১৯ সাল থেকে এখানে ৫০ জন আবাসিককে নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমটি চালু করি বাড়ি ভাড়া নিয়ে। কিন্তু সেক্রেটারির সঙ্গে মতবিরোধের জন্য অনাথ আশ্রম এখানে চালু করতে পারিনি।’’
তাঁর সোসাইটি এক বার কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান পেয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তাপস। বলেছিলেন, ‘‘এখানে আবাসিকদের থাকা-খাওয়া-চিকিৎসার সব খরচ আমরা বহন করি। আবাসিকদের কাছ থেকে এক পয়সা নেওয়া হয় না।’’
নিয়োগ দুর্নীতিতে তাপস গ্রেফতার হওয়ার পরে প্রশ্ন উঠছে, দুর্নীতির টাকাই কি বৃদ্ধাশ্রমে ব্যয় করা হয়েছিল? বৃদ্ধাশ্রমের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
আবাসিক ও কর্মীরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলেই জানিয়েছেন। তবে আগামী দিনে তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত সকলে। তবে মুখে কেউই কিছু বলছেন না।
বুধবার এক আবাসিক বলেন, ‘‘এখানে আমাদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। কে চালাত জানি না। তবে আমরা ভাল আছি। এখানে কত লোকই তো আসে। আলাদা করে কে তাপস মণ্ডলকে চিনি না।’’
তাপস গ্রেফতার হয়েছেন এ কথা আবাসিকেরা শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে তাঁদের কোনও উৎসাহ নেই বলে জানিয়েছেন। এক আবাসিকের আবেদন, ‘‘আমরা এখানে ভাল আছি। যেন এ ভাবেই থাকতে পারি। নিশ্চয়ই কোনও ব্যবস্থা হবে।’’
এক কর্মী জানান, তিনি পাঁচ মাস আগে কাজে যোগ দিয়েছেন। বাড়ি মুর্শিদাবাদে। তাঁর কথায়, ‘‘কে এটি চালায়, তা জানি না। তাপস মণ্ডল এক বার এখানে এসেছিলেন। এটির কে মালিক, তা জানি না।’’
হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা বলেন, ‘‘বৃদ্ধাশ্রমের জমিটি এক মহারাজের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে চালানো হচ্ছে। আমরা জানতাম, একটি সোসাইটি সেটি পরিচালনা করে। কে তার কর্ণধার, জানতাম না। এখন জানতে পেরেছি, তিনি তাপস মণ্ডল।’’
পুরপ্রধান জানান, বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের উপরে আমরা লক্ষ্য রাখছি। তাঁরাও যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy