মৃদুস্বরে ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন স্ত্রী। কান খাড়া করে পাশ থেকে সব শোনেন স্বামী। ফোন রেখে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়তেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন যুবক। তার পর নিজেই থানায় গিয়ে জানালেন খুনের কথা। মঙ্গলবার এমনই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানা এলাকায়। ধৃতের দাবি, প্রেমিকের সঙ্গে মিলে তাঁকে খুন করার ছক কষছিলেন স্ত্রী। তাঁদের কথোপকথন শুনে তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন। মঙ্গলবার ধৃতকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে পাঁচ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম বাপি গায়েন। বছর আটেক আগে প্রিয়াঙ্কা গায়েন নামে এক যুবতীকে ভালবেসে বিয়ে করেন তিনি। আদতে ক্যানিংয়ের হেরোডাঙার বাসিন্দা বাপি কাজ করেন কলকাতার পার্কসার্কাসের একটি কারখানায়। সেই সূত্রে স্ত্রীকে নিয়ে সোনারপুর পুরসভার মাহিনগরে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন বাপি। তাঁদের প্রতিবেশী সুপ্রকাশ দাসের সঙ্গে বাপির স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত। প্রতিবেশীরাও জানাচ্ছেন, বিবাহিত ওই যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করতেন বাপি। এ নিয়ে দম্পতির প্রায়শই ঝগড়া হত। কিছু দিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান সুপ্রকাশ।
কিন্তু বাপির দাবি, তার পরেও স্ত্রীর সঙ্গে সুপ্রকাশের সম্পর্ক ছিল। তাঁরা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দেখা করতেন। সময় কাটাতেন দু’জনে। সেটা তিনি জানতে পারার পরে স্ত্রীর সঙ্গে আবার অশান্তি বাধে এর মধ্যেই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা এবং তাঁর প্রেমিক। সে কথা জানতে পেরেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সোমবার রাতে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়ার পর তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বাপি। পুলিশকে পুরো ঘটনা জানিয়ে স্ত্রীকে মেরে ফেলার কথা স্বীকার করেন। ঘটনাক্রমে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতার দেহ উদ্ধার করা হয়।
ধৃতের দাবি, নিজের জীবন বাঁচাতে এবং স্ত্রীর উপর অসন্তোষ, রাগে তাঁকে খুন করেছেন। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়া সম্পর্কে জটিলতা থেকে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে সোনারপুর থানার পুলিশ।