Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
Primary School at Jaynagar

অসুস্থ শিক্ষিকা, স্কুলে পড়াচ্ছেন ছেলে-বৌমা

সম্প্রতি স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, কোনও শিক্ষক নেই। পড়ুয়াদের মার্কশিট বিতরণ করছেন সনাতন হালদার নামে এক ব্যক্তি।

এই স্কুল ঘিরেই অভিযোগ।

এই স্কুল ঘিরেই অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।

সমীরণ দাস 
জয়নগর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:২৬
Share: Save:

মাত্র দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন জয়নগরের রাজাপুর করাবেগ পঞ্চায়েতের ঝিকরা অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে। কিন্তু দু’জনেই অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরে আসছেন না। পঠনপাঠন চলবে কী করে? শিক্ষিকার ছেলে-বৌমাই সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া, মার্কশিট দেওয়া-সহ যাবতীয় কাজই দেখভাল করেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল স্কুলটি। সংস্কারের অভাবে স্কুলভবন ভগ্নপ্রায়। পঠনপাঠনের মানও তলানিতে। পড়ুয়া সংখ্যা কমতে কমতে জনা তিরিশে এসে ঠেকেছে। তার উপর শিক্ষকেরা স্কুলে না আসায় কার্যত ধুঁকছে স্কুলটি। এই পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষিকার ছেলে-বৌমাই স্কুল চালান বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

সম্প্রতি স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, কোনও শিক্ষক নেই। পড়ুয়াদের মার্কশিট বিতরণ করছেন সনাতন হালদার নামে এক ব্যক্তি। সনাতন জানান, তিনি স্কুলের শিক্ষিকা বাসন্তীবালা হালদারের ছেলে। তাঁর কথায়, “মা অসুস্থ। স্কুলে আসতে পারেন না। তাই আমি এসেছি মার্কশিট বিতরণ করতে।” পরীক্ষা নিতেও তিনি এসেছিলেন বলে জানান সনাতন। তবে, ক্লাসে পড়ানোর কথা স্বীকার করতে চাননি। যদিও স্থানীয় মানুষের দাবি, নিয়মিতই ক্লাস করান সনাতন। স্কুলে ছিলেন সনাতনের স্ত্রী সরস্বতীও। তিনি অবশ্য পড়ানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “শাশুড়ি স্কুলে আসতে পারেন না। আরেক শিক্ষকও অসুস্থ। তাই আমাকে পড়াতে বলা হয়েছে।”

স্কুলের পঠনপাঠন নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। মানস সর্দার বলেন, “স্কুলটা কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে। পড়াশোনা হয় না। স্কুলভবন ভেঙে পড়ছে। শিক্ষিকার ছেলে-বৌমাই স্কুল চালান। কোনও অভিভাবকই ছেলে-মেয়েকে এই স্কুলে ভর্তি করতে চান না। স্কুলে নানা রকম আর্থিক দুর্নীতিও চলছে। স্কুলটিকে আগের অবস্থায় ফেরানোর জন্য প্রশাসন পদক্ষেপ করুক।”

জয়নগর উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, “স্কুলের দুই শিক্ষক-শিক্ষিকাই অসুস্থতার জন্য ছুটি নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পাশের স্কুলের এক শিক্ষককে আপাতত ওই স্কুলের পঠনপাঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন করে প্রধান শিক্ষকও নিয়োগ হয়েছে। দ্রুত তিনি স্কুলে যোগ দেবেন।” শিক্ষিকার ছেলে-বৌমার পড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।”

অন্য বিষয়গুলি:

jaynagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy