E-Paper

এডস-সচেতনতা ছড়াতে সাইকেলে বিশ্বভ্রমণে সোমেন

বিএ তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ করে ২০০৪ সালের ২৭ মে মানুষকে এডস নিয়ে সচেতন করতে সাইকেলে চেপে উত্তর-পূর্ব ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন সোমেন।

এডস-এর সচেতনতা প্রচারে সোমেন (ডান দিকে)।

এডস-এর সচেতনতা প্রচারে সোমেন (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০২
Share
Save

এডস নিয়ে সারা বিশ্বকে সচেতন করতে সাইকেলে একের পর এক দেশে পাড়ি দিচ্ছেন বাসন্তীর সোমেন দেবনাথ। ইতিমধ্যেই ১৮৬টি দেশে সেই সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন বছর ঊনচল্লিশের এই যুবক। এখন তিনি রয়েছেন ব্রুনেইতে। সব কিছু ঠিক থাকলে ১৯১টি দেশে সচেতনতা প্রচারের লক্ষ্যমাত্রা সেরে আগামী ডিসেম্বরে, প্রায় ২০ বছর পরে নিজের দেশে ফিরবেন সোমেন। ফিরে ক্যানিং থেকে সোনাখালি পর্যন্ত ২০ কিমি সাইকেল র‍্যালিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।

মাত্র চোদ্দো বছর বয়সেই এডসের ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন তিনি। জেদ চেপে যায় আরও ভাল করে এই রোগ সম্পর্কে জানার। তেমনই তিনি স্থির করেন, অন্যদেরও এই রোগকে প্রতিহত করার বিষয়ে সচেতন করতে হবে। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে এডস নিয়ে পড়াশোনা ও এটি প্রতিরোধের জন্য রিজিয়োনাল এডস কন্ট্রোল সোসাইটি থেকে স্পেশ্যাল প্রশিক্ষণ নেন তিনি। সেই শুরু, এই মারণ রোগ সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন সোমেন।

বিএ তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ করে ২০০৪ সালের ২৭ মে মানুষকে এডস নিয়ে সচেতন করতে সাইকেলে চেপে উত্তর-পূর্ব ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন সোমেন। একইসঙ্গে পড়শি কয়েকটি দেশের কিছু কিছু অংশে প্রচার সেরে দশ মাস বাদে বাড়ি ফেরেন। তারপরেই তিনি ঠিক করেন, সাইকেলে চেপেই বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে গিয়ে এডস সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা দেবেন। সেই মতো, ২০০৬ সালে বিশ্ব ভ্রমণের জন্য বেরিয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে এশিয়ার ২৪টি দেশ ঘুরে ইউরোপে পা রাখেন সোমেন। তারপরে একে একে আফ্রিকা এবং আমেরিকার বিভিন্ন দেশে।

ইতিমধ্যেই ১৮৬টি দেশ ঘোরা হয়ে গিয়েছে সোমেনের। মূলত, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সংগঠন, সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানগুলিতে গিয়ে এই সচেতনতার বার্তা দিচ্ছেন তিনি। সোমেনের এই প্রচেষ্টাকে সম্মান জানিয়েছেন অনেকেই। ব্রুনেই থেকে ফোনে সোমেন বলেন, “গত প্রায় কুড়ি বছরে বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রদূতেরা আমার পাশে থেকেছেন। আমাকে এই কাজে সাহস জুগিয়েছেন। কিন্তু কষ্ট লাগে নিজের রাজ্য থেকে সরকারি ভাবে কেউ আমার খোঁজ রাখেননি। আমি নিজেও বেশ কয়েকবার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি।”

বাসন্তীতে বাড়ি হলেও বাবা মারা যাওয়ার পরে মাকে নিয়ে সোমেনের অন্য দুই ভাই সোনারপুরে থাকেন। সোনারপুর সংলগ্ন সুভাষগ্রাম অঞ্চলে একটি জায়গায় সংগ্রহশালা তৈরি করেছেন সোমেন। বিশ্বভ্রমণ করে পাওয়া জিনিসপত্র সেই সংগ্রহশালায় থাকছে। এখানেই ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে ভবিষ্যতে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এডস আক্রান্তদের পাশে থাকার কাজ করা হবে সেখানে। ‘পিউপিল হাউস’ থেকে কিছুদিন আগে চুরি গিয়েছিল বিদেশ থেকে পাওয়া সোমেনের বহু উপহার।

সোমেনের মা শোভারানি দেবনাথ বলেন, “ভাল লাগছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ছেলে দেশে ফিরবে। ২০২০ সালে ফেরার কথা ছিল ওর। কিন্তু করোনার বিধিনিষেধের কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় ফিরতে পারেনি। ওর ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

aids

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।