(বাঁ দিকে) তৃণমূল নেত্রী সিরিয়া পারভিন। বিজেপিতে থাকাকালীন সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে সিরিয়া (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র ।
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বসিরহাটের সেই নেত্রী সিরিয়া পারভিনকে রাতের অন্ধকারে হেনস্থার অভিযোগ। রবিবার রাতে বাদুড়িয়া থানার যদুরাটি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার রাতে নিজের দলীয় কাজকর্ম মিটিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অভিযোগ, তখনই বাদুড়িয়ার যদুরাটিতে তাঁর গাড়ি দাঁড় করিয়ে হেনস্থা করা হয় তাঁকে। ঠেলে মাটিতে ফেলে দিয়ে কটূক্তি করা হয়। এমনকি, তাঁর গাড়ির চালককেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় বিজেপি এবং আইএসএফের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সিরিয়া। যদিও ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় আইএসএফ নেতৃত্বও।
উল্লেখ্য, সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি যখন উত্তাল, সেই সময় ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে টাকিতে জঙ্গি আন্দোলনে নামেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। সুকান্তের উপস্থিতিতেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। সুকান্ত উঠে পড়েছিলেন পুলিশের গাড়ির বনেটে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল সিরিয়াকে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সুকান্তের সঙ্গে পুলিশের গাড়ির বনেটে উঠে প্রথম বার খবরের শিরোনামে এসেছিলেন সিরিয়া। সে সময় তাঁকে হাসনাবাদ থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পরে জামিন পান সিরিয়া। তার মাস তিনেক পরে বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই একরাশ অভিযোগ তুলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি, সন্দেশখালির ঘটনা বিজেপি টাকা দিয়ে সাজিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন। এ বার সেই সিরিয়াকেই হেনস্থার অভিযোগ উঠল তাঁর পুরনো দল বিজেপির বিরুদ্ধে।
সিরিয়ার দাবি, ‘‘আমি কাজ শেষ করে ফিরছিলাম। যদুরাটি নতুন হাটখোলা বাজার শেষ করে এগিয়ে আসতেই বিশেষ কাজে গাড়ি দাঁড় করাতে বলেছিলাম চালককে। কিন্তু গাড়ি পুরোপুরি দাঁড় করানোর আগেই একটা ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। আমাকে বলে, ‘দালালি হচ্ছে? বিজেপি থেকে তৃণমূলে এসেছেন দালালি করার জন্য? কী করতে পারি দেখবেন?’ আমার গাড়িচালক প্রশ্ন করায়, ওকে টেনে বার করে মারতে শুরু করে। আমি গাড়ি থেকে বেরোতে আমাকে ঠেলে ফেলে দেয়। আমার নিরাপত্তারক্ষী এগিয়ে আসে। আরও অনেকে জড়ো হয়ে যায়। আমাকে পরিকল্পিত ভাবে মারার চেষ্টা করা হয়েছিল। বাজে বাজে গালিগালাজ করা হয়। আমার নিরাপত্তারক্ষী না থাকলে আরও বিপদ হত। কে এসেছিল তদন্ত করে দেখা হোক। সাইকেলে করে এসেছিল এক জন। ওর পিছনে কত জন ছিল জানি না। আমার মনে হয় ওরা বিজেপি সমর্থিত আইএসএফ কর্মী। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে চিনি না। কিন্তু এলাকারই ছেলে। আইএসএফকে আগে বিজেপি ব্যবহার করেছে। এখনও করছে। আমি শীর্ষ নেতৃত্বকে এই বিষয়ে জানিয়েছি।’’
রবিবার রাতেই বাদুড়িয়া থানায় পুরো বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও দায়ের করেছেন সিরিয়া।
যদিও তৃণমূল নেত্রীর উপর হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করে বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য কমিটির সদস্য কাসেম আলি বলেন, ‘‘সিরিয়া পারভিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন। সেই কারণে তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই ওই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাই ওঁকে হেনস্থা করেছেন। আর তা না হলে উনি নিজে লোকজন ঠিক করে নিজের উপর হামলা চালিয়েছেন চর্চায় আসার জন্য। এর সঙ্গে বিরোধীদের কোনও যোগ নেই।’’
অন্য দিকে, আইএসএফের উত্তর ২৪ পরগনার যুগ্ম সম্পাদক মহম্মদ মুসা করিম মোল্লা বলেন, ‘‘সিরিয়া পারভিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বাদুড়িয়াতে তৃণমূলের দুটো গোষ্ঠী। বিধায়কের একটা গোষ্ঠী আর বিধায়ক-বিরোধী একটা গোষ্ঠী। সিরিয়া তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় একটা গোষ্ঠী মেনে নিতে পারছে না। আর সেই কারণেই কালকের ওই ঘটনা। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এর সঙ্গে আইএসএফের কোন যোগ নেই। আইএসএফ এ রকম হিংসার রাজনীতি করে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy