প্রতীকী ছবি।
প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় একটি দ্বীপের সঙ্গে আর একটি দ্বীপের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হল জলযান। আমপানের তাণ্ডবে বহু জলযান ভেঙেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন দ্বীপে খেয়া পেরোনোর সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে ত্রাণ পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছে। গোসাবা ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঝড়ের তাণ্ডবে বহু জলযান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সমস্যা হচ্ছে।’’
কী ভাবে জলযান তৈরি করে সমস্যার সমাধান করা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। সুন্দরবনে হাতে গোনা কয়েকটি দ্বীপে সেতু তৈরি করা হলেও অধিকাংশ দ্বীপে সেতু নেই। সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থার এখনও কোনও উন্নতি হয়নি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যম এখনও নৌকো, ভুটভুটি। গোসাবার বালি, কুমিরমারি, সাগর, পাথরপ্রতিমা, কুলতলি, কাকদ্বীপ-সহ বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। ওই সব এলাকার ত্রাণ পৌঁছে দিতে জলযান একমাত্র ভরসা। প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় নদী পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। সেই কারণে প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘খেয়া পরিষেবায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। আমরা চেষ্টা করছি বিভিন্ন দিকে দ্রুত খেয়া পরিষেবা চালু করতে। প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় কিছু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে গিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ত্রাণ পৌঁছে দিতে আমাদের কর্মীরা পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন। বিভিন্ন পঞ্চায়েতকেও এ কাজে সামিল করা হয়েছে।’’
আমপানের তাণ্ডবে নদীর পাড়ে রাখা জলযান শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নয়। বিভিন্ন জেটিঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন রাস্তায় গাছ পড়ে এবং নদী বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে বহু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই কারণেও ত্রাণ পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর। ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকার সারেঙ্গাবাদ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সোনামণি মুর্মু বলেন, ‘‘ঝড়ের তাণ্ডবে বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি কোনও সাহায্য পাইনি। শুকনো মুড়ি, চিড়ে, গুড় খেয়ে দিন কাটাচ্ছি।’’
অতীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে দেখা গিয়েছে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে আকাশ পথে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে খাবারের প্যাকেট ফেলে দেওয়া হয়। আমপানের তাণ্ডবে জেলার এক কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৭৩ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় ১০ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, প্রত্যন্ত এলাকার অধিকাংশ মানুষের কাছে সরকারি ত্রাণ এখনও পৌঁছয়নি।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামিমা শেখ বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি, বিভিন্ন মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে। এ জন্য জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিযুক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy