Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Crisis of water

পানীয় জলের সঙ্কট মগরাহাটের গ্রােম

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালে বজবজের ডোঙাড়িয়ায় গঙ্গার জল পরিস্রুত করে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

জলের জন্য অপেক্ষা।

জলের জন্য অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র ।

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২২
Share: Save:

পানীয় জলের পাইপলাইন বসানো হয়েছে বহু দিন। ট্যাপ কলও বসানো হয়েছিল, কিন্তু জল পড়ে না। আবার কোথাও সামান্য জল পড়লেও তা নিতান্তই সরু হয়ে। এই গরমে মগরাহাট ২ ব্লকে প্রায় সব পঞ্চায়েত এলাকাতেই এই দৃশ্য চোখে পড়ে। পানীয় জলের সমস্যার জন্যই জল কিনে খেতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালে বজবজের ডোঙাড়িয়ায় গঙ্গার জল পরিস্রুত করে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই মতো মগরাহাট ২ ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতে ১১টি রিজ়ার্ভার থেকে পাইপ লাইনের সাহায্যে এলাকায় জল পৌঁছে যেত। কিন্তু এত বছরে এই এলাকায় নতুন রাস্তাঘাট হয়েছে, পুরনো রাস্তা সংস্কার হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পাইপলাইন কেটে গিয়েছে, কোথাও ফেটে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে অধিকাংশ গ্রামের পাইপ লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ায় রিজ়ার্ভার থেকে জল পৌঁছচ্ছে না। বছরখানেক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের জল জীবন মিশন প্রকল্প অনুমোদন পায়। প্রকল্পে বলা হয়েছে রিজ়ার্ভার বসানোর জন্য এক বিঘা জমি দরকার এবং ওই রিজ়ার্ভারের ৫০০ মিটার থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে আরও দু’টি রিজ়ার্ভার বসানোর জন্য চার শতক জমির প্রয়োজন।

সেই মতো মগরাহাট ২ ব্লকে এই প্রকল্পের জন্য ৩৩টি রিজার্ভার বসানোর কাজ চলছে। ২০২৪ সালের ৩১ এপ্রিল ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পের কাজ এখনও যে অবস্থায় আছে, তা কবে শেষ হবে তা নিয়ে সন্দিহান বাসিন্দারা। বাধ্য হয়েই পানীয় জল কিনে খেতে হচ্ছে। ওই ব্লকের ধামুয়া দক্ষিণ পঞ্চায়েতের দাসপাড়ায় দু’শো জনের বেশি বাসিন্দা। নলকূপগুলি অনেক আগেই খারাপ হয়ে গিয়েছে। নলবাহিত কলের উপরেই নির্ভরশীল গোটা পাড়া। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লম্বা লাইন থাকে। ওই পাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুকুরের জল তলানিতে ঠেকেছে। তাই ব্যবহার করা যায় না। স্নান, খাওয়া, রান্না ও জামাকাপড় কাচাকাচি— সবই ওই নলবাহিত কলের জলের লাইনের জলের উপরে নির্ভর করে চলে। ওই জল না পেলে সাইকেল বা ভ্যানে করে দূরের পুকুরে গিয়ে স্নান করতে হচ্ছে। পাড়ার বাসিন্দা স্বপ্ন রুইদাস বলেন, ‘‘বছরের পর বছর গরমে সময়ে জলের সঙ্কট চলছে। দূর থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনতে হয়। পঞ্চায়েত, প্রশাসনকে একাধিক বার জানানো হয়েছে। কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’

একই অবস্থা ওই ব্লকের মগরাহাট পশ্চিম পঞ্চায়েতে মাহিতালাব গ্রামেও। পাইপ লাইনে দীর্ঘ দিন ধরে জল নেই। নলকূপের অপরিস্রুত জল সরু হয়ে পড়ে। অনেককেই জল কিনে খেতে হচ্ছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা মেহদি হাসান ফকির জানালেন, পুকুরে জল তলানিতে ঠেকেছে। ঘোলা জল ব্যবহার করা যায় না। পাইপ লাইনের জল কবে শেষ এসেছে মনে পড়ে না বাসিন্দাদের। ফলে পানীয় জল ছাড়াও বাড়ির রান্নাবান্না, জামাকাপড় কাচার জল জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই এলাকায় মাহিতালাব ছাড়াও সর্বানন্দপুর, বিলন্দপুর সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা নিয়মিত জল কিনে খেতে হচ্ছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহা বলেন, ‘‘পুরনো পাইপ লাইনে জল সরবরাহ হচ্ছে। সাব মার্সিবলের সাহায্যে জল তোলা হচ্ছে। তবে জলের সমস্যা কিছুটা রয়েছে। নতুন করে পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Magrahat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy