Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Fraudulence

জমি কিনতে গিয়ে প্রতারিত, গ্রেফতার ৪

মাঝে মধ্যেই জমি লাগবে কিনা জানতে চেয়ে ফোন আসত অলোকের কাছে। লোকসভা ভোটের পরে ঘন ঘন ফোন আসতে থাকে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৯:০৯
Share: Save:

প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে কয়েক লক্ষ টাকা খোওয়ালেন দুই ব্যক্তি। পুলিশ পরিচয় দিয়ে মারধর করে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি অশোকনগর থানা এলাকার। পুলিশ এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে। হাবড়ার এসডিপিও প্রসেনজিৎ দাস জানান, প্রতারকদের ধরতে অভিযান চলবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ৭ জুলাইয়ের। হালিশহর বাঘমোড়ের বাসিন্দা অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বছর দু’য়েক আগে কল্যাণী এইমসে গিয়ে পরিচয় হয়েছিল কয়েক জনের সঙ্গে। তারা জানিয়েছিল, জমি কেনা-বেচা করে। যদি জমির প্রয়োজন হয়, তিনি যেন যোগাযোগ করেন। ফোন নম্বর আদান-প্রদান হয়।

মাঝে মধ্যেই জমি লাগবে কিনা জানতে চেয়ে ফোন আসত অলোকের কাছে। লোকসভা ভোটের পরে ঘন ঘন ফোন আসতে থাকে। বলা হয়, ভাল জমি রয়েছে, এখন না নিলে হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। পুরনো ২ হাজার টাকার নোট তারা অর্ধেক দামে বদলে দিচ্ছে বলেও জানিয়েছিল।

অলোক জানান, ৭ জুলাই মৃত্যুঞ্জয় দাস নামে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে অলোক জমি কিনতে হাজির হন আমডাঙার আওয়ালসিদ্ধি এলাকায়। তাঁদের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া একাধিক জমি দেখানো হয়। দুপুরে সকলে মিলে হোটেলে খাওয়া-দাওয়া সারেন। পরে ফের আওয়ালসিদ্ধি মোড়ের কাছে আসেন।

প্রতারকেরা সে সময়ে ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলে। পুলিশকে অলোক জানান, ইতিমধ্যে হঠাৎ একটি বড় গাড়িতে চার-পাঁচ জন এসে পড়ে। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। অলোক ও তাঁর বন্ধুকে গাড়িতে তুলে নেয়। গাড়ি অশোকনগরের দিকে ছুটতে থাকে।

অভিযোগ, চলন্ত গাড়িতে তাঁদের থেকে নগদ টাকা মারধর করে ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্তেরা। পরে অশোকনগরের সুরিয়া এলাকায় নামিয়ে দেয় অলোক ও মৃত্যুঞ্জয়কে।

হরিণঘাটা এবং পরে আমডাঙা থানায় গিয়ে কথা বলেন অলোকেরা। সেখান থেকে তাঁদের অশোকনগর থানায় যেতে বলা হয় বলে দাবি অলোকের। এ ভাবে দু’দিন দুই থানায় ঘোরাঘুরি করে বৃহস্পতিবার অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন অলোক।

তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় হরিণঘাটার বাসিন্দা দেবব্রত দাস ও আমডাঙার বাসিন্দা ইব্রাহিম মণ্ডলকে। শনিবার তাদের বারাসত জেলা আদালতে তোলার পরে বিচারক তিন দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে রবিবার গ্রেফতার করা হয় গাইঘাটার বাসিন্দা জুলফিকার মণ্ডল ও হাবড়ার নারায়ণকাঠির বাসিন্দা ফারুক হোসেনকে। তাদেরও বারাসত জেলা আদালতে তোলার পরে দু’দিনের পুলিশি হেফাজত নেওয়া হয়।

সোমবার চার জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে অশোকনগর থানার পুলিশ। ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উদ্ধারও হয়েছে। বাকি টাকার খোঁজ চলছে। এই ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদেরও খোঁজ করছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় জমি কেনা-বেচার বিজ্ঞাপন দিত প্রতারকেরা। আগ্রহীরা যোগাযোগ করলেই তাদের সঙ্গে ভাব জমাত। ধীরে ধীরে নানা ভাবে টাকা হাতিয়ে নিত। পুরনো ২০০০ টাকার নোটও অর্ধেক দামে বদলে দেবে বলে সে সব ছিনতাই করত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ashoknagar Fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE