E-Paper

নেট বাতিলে বিপর্যস্ত দুই জেলার অনেক পরীক্ষার্থী

পরীক্ষায় নানা ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে ক্ষুব্ধ যোগমায়া। তাঁর কথায়, “সাধারণত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র হয়। এ বার স্কুলেই হল। অনেক বেঞ্চই এবড়ো-খেবড়ো।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ০৭:৫৫
Share
Save

বছর দেড়েকের শিশুসন্তানকে বাড়িতে রেখে ইউজিসি-নেট পরীক্ষায় বসেছিলেন বারুইপুরের কল্যাণপুর এলাকার বাসিন্দা যোগমায়া সর্দার। মঙ্গলবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরতে লেগে গিয়েছিল ঘণ্টা সাতেক। সেই পরীক্ষা আবার দিতে হবে, ভাবতেই পারছেন না যোগমায়া।

শুধু যোগমায়াই বা কেন, সাগরের খানসাহেব আবাদ গ্রামের বিকাশ রানা, মিনাখাঁর বাসিন্দা সৌমি চক্রবর্তী-সহ দুই ২৪ পরগনার বহু পরীক্ষার্থীই হতাশ। কষ্ট করে পরীক্ষা দেওয়ার পরেও আবার পরীক্ষায় বসা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

অনিয়মের অভিযোগে নেট বাতিল ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। গত মঙ্গলবার পরীক্ষা হয়। বুধবারই তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। নেট নিয়ে সিবিআই তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে নতুন পরীক্ষার তারিখ।

ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাশ করে এমফিল করেছেন যোগমায়া। কলেজে পড়ানোর স্বপ্ন সফল করতেই নেটে বসার সিদ্ধান্ত নেন। যোগমায়ার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল সোনারপুর বিদ্যাপীঠ স্কুলে। তিনি জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার কথা ছিল সাড়ে সাতটায়। ট্রেনে চেপে সোনারপুর পৌঁছে ঠিক সময়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘রিপোর্ট’ করেন। পরীক্ষা শুরু হয় সাড়ে ন’টায়। সাড়ে বারোটায় পরীক্ষা শেষে বাড়ি পৌঁছতে দেড়টা বেজে যায়।

পরীক্ষায় নানা ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে ক্ষুব্ধ যোগমায়া। তাঁর কথায়, “সাধারণত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র হয়। এ বার স্কুলেই হল। অনেক বেঞ্চই এবড়ো-খেবড়ো। সেখানে বসে ওএমআর শিট পূরণ করতে সমস্যা হয়েছে। কোনও কার্বন কাগজও দেওয়া হয়নি। ফলে ওএমআর-এর নথিও রাখা যায়নি। কাউকে পেন নিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে, কাউকে হয়নি। পরীক্ষা বাতিলে কাউকেই দোষারোপ করতে চাই না। তবে, পরীক্ষার্থীদের দিকটাও ভাবা উচিত।”

সাগরের খানসাহেব আবাদ গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ রানা জানান, পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। মনের মধ্যে তৈরি হয়েছে অনেক প্রশ্ন। তাঁর কথায়, “টানা ছ’মাস কঠোর পরিশ্রম করে পরীক্ষা দিয়েছি। আবার কবে পরীক্ষা হবে? ফের আবেদন করতে হবে? এখনও পর্যন্ত কিছুই জানানো হয়নি। এমনিতে পরীক্ষা দিতে ভালই খরচ হয়েছে। তার উপর এমন পরিস্থিতি।”

দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে ভাল পরীক্ষা দিয়েছিলেন বলে জানান মিনাখাঁর বাসিন্দা সৌমিও। নতুন করে পরীক্ষা দিতে হলে কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। সৌমির কথায়, “নতুন করে পরীক্ষা দিতে হলে ফের প্রস্তুতি নিতে হবে। সেটা যথেষ্ট বিড়ম্বনার। পরীক্ষা কেমন হবে তা নিয়েও যথেষ্ট চিন্তা আছে। আবার কোনও কারণে পরীক্ষা বাতিল হবে কি না, কোনও দুর্নীতি হবে কি না, সেটাও মাথায় ঘুরছে।”

পরীক্ষাকেন্দ্রের বজ্র আঁটুনির প্রসঙ্গ তুলে টাকির পরীক্ষার্থী উপাসনা চক্রবর্তী কটাক্ষ করেছেন আয়োজকদের। তাঁর কথায়, “পরীক্ষা কেন্দ্রে জলটুকুও নিতে দেয়নি সঙ্গে। ব্যাগ পরীক্ষাকেন্দ্রের পাঁচিলের বাইরে ফেলে ঢুকতে হয়েছিল। এখন বুঝতে পারছি এ সব বজ্র আঁটুনি আসলে ফস্কা গেরো। নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে আবার পরীক্ষা দেওয়াটা যে সোজা নয়, তা পরীক্ষা যাঁরা নেন তাঁরা বোঝেন না!”

পুরো ঘটনায় ক্ষুব্ধ হাসনাবাদের সুজয় বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “এই নিয়ে তিন বার নেট দিলাম। পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। ভেবেছিলাম পাশ করতে পারব। কিন্তু পরীক্ষা যে ভাবে বাতিল হল, তাতে আমি হতাশ। জানি না এ বার পরীক্ষা কতটা প্রস্তুতি নিয়ে দিতে পারব! সরকার ছেলেখেলা করছে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

NET Exam

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।