মাছের দাম বাড়ায় ফাঁকা বাজার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বুলবুলের দাপটে এখনও হাল ফেরেনি পথঘাটের। জায়গায় জায়গায় গাছের ডাল পড়ে। গাড়ি যাতায়াত স্বাভাবিক হয়নি। তার উপরে, মৎস্যজীবীদের অনেকের বাড়িঘরের ক্ষতি হওয়ায় তাঁরা পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারেননি। ফলে বসিরহাটের ভেড়ি, জলাশয় থেকে মাছের জোগানে টান পড়েছে। যার ফল ভুগতে হচ্ছে নানা এলাকার মানুষকে।
বনগাঁর বাজার ঘুরে দেখা গেল, ভেটকি মাছের কেজি দিন কয়েক আগেও ছিল ৪০০-৪৫০ টাকা। রাতারাতি তা বেড়ে হয়েছে ৬০০ টাকা। মাছ বিক্রেতারা জানালেন, বনগাঁর মাছের বাজারে বেশির ভাগ মাছ আসে বসিরহাট ও ডায়মন্ড হারবার থেকে। কিন্তু বুলুবুলের জেরে ওই সব এলাকা থেকে মাছ আসছে খুব কম। জোগান নেই বললেই চলে। এর ফলেই বেড়েছে দাম।
বনগাঁ শহরের অন্যতম বড় বাজার ট বাজার। মঙ্গলবার সকালে সেখানে গিয়ে জানা গেল, চিংড়ির দাম ক’দিন আগেও ছিল কেজি প্রতি ৩০০-৩৫০ টাকা। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা দরে। রুই বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজিতে। হঠাৎ করেই কেজি প্রতি দাম বেড়ে গিয়েছে ৫-৬০ টাকা করে। কিছুটা হলেও দাম বেড়েছে তেলাপিয়া, পার্সে, কাতলারও।
মাছ বিক্রেতা অঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘বুলবুল ঝড়ের পরে বসিরহাট থেকে মাছ আসা কমে গিয়েছে। সামান্য যা মাছ আসছে, আমাদের তা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে আমাদেরও ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিতে হচ্ছে।’’ মাছের আড়তের কর্মী নব গায়েন জানালেন, বসিরহাট ও ডায়মন্ড হারবার থেকে মাছ কম আসায় স্থানীয় নদী-পুকুরের মাছ বা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মাছের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে।
বনগাঁ আরও একটি বড় বাজার নিউ মার্কেট। সেখানেও মাছের দাম বেড়েছে। মাছ বিক্রেতা শ্রীকান্ত হালদার জানালেনস, বসিরহাট ও ডায়মন্ড হারবার থেকে মাছ কম আসায় কেজি প্রতি মাছের দাম ৩০-৪০ টাকা করে বেড়েছে। মাছ কিনছিলেন বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী উকিল। বললেন, ‘‘যে সব মাছ কিনব বলে বাজারে এসেছিলাম, দাম শুনে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে।’’ অজিত সাহা ভেটকি কিনতে এসে ৬০০ টাকা দাম শুনে মুপগির মাংস কিনে বাড়ির পথ ধরলেন। বনগাঁর এক ব্যক্তির বাবা মারা গিয়েছেন দিন কয়েক আগে। সামনেই শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম নিমন্ত্রিতদের সংখ্যা ৫০০ জন করব। মাছের যা দাম বেড়েছে, তাতে সংখ্যাটা ৪০০-এ নামিয়ে আনতে হবে।’’
তবে মাছের কারবারিদের মতে, রবি-সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার জোগান সামান্য হলেও বেড়েছে। দিন পনেরোর মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে দাম কমবে বলে তাঁদের আশা। সন্দেশখালির এক মাছ ব্যবসায়ী অবশ্য জানান, জলে প্রচুর গাছের পাতা, আবর্জনা পড়েছে। এর ফলে চিংড়ির ক্ষতি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy