মেরামত করা হচ্ছে সুরক্ষা-জাল। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙেছে প্রচুর। বাদ যায়নি নদী লাগোয়া পর্যটনকেন্দ্রগুলিও। ঝড়ের দাপটে জঙ্গলের সীমানা বারবার লাগানো সুরক্ষা জালও ছিঁড়ে গিয়েছে বহু জায়গায়। বেশ কিছু দিন কেটে গেলেও অনেক জায়গায় এখনও নতুন জাল লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে যে কোনও মুহূর্তে বাঘ বা অন্য বন্য জন্তু গ্রামে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ।
সুন্দরবনে বসতি এলাকায় বাঘ ঢুকে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। অতীতে বহুবার খাবারের খোঁজে জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ঢুকে পড়েছে রয়্যালবেঙ্গল। গৃহস্থের গরু, ছাগল তুলে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। বাঘ বা অন্য জন্তুর গ্রামে ঢোকা আটকাতেই নদী ও জঙ্গলের সীমানা বরাবর নাইলনের নেট দিয়ে সুরক্ষা জাল তৈরি করেছে বন দফতর। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন প্রায় ১০৫ কিলোমিটার জায়গায় এই সুরক্ষা জাল রয়েছে। বুলবুলের দাপটে তার মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাল ছিঁড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বন দফতর অবশ্য জানিয়েছে, দ্রুত জঙ্গল-লাগোয়া নাইলন নেট লাগানোর কাজ চলছে।
গোসাবার রাঙাবেলিয়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘অতীতে বহুবার বাঘ ঢুকেছে এলাকায়। ঝড়ে যে ভাবে ফেন্সিং নেটগুলি ছিঁড়ে গিয়েছে তাতে যে কোনও সময়ে আবার লোকালয়ে বাঘ চলে আসতে পারে। এমনিতেই আমরা সব সময়ে বাঘের আতঙ্কে থাকি। এখন আরও ভয়ে আছি।’’
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের এএফডি অনিন্দ্য গুহ ঠাকুরতা বলেন, ‘‘জঙ্গল-লাগোয়া কিছু জায়গায় ফেন্সিং নেটে সমস্যা হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় মেরামত করা হয়েছে। কিছু জায়গায় মাটির ধস নেমে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। বনকর্মীরা সব সময়ে ওই সব জায়গায় নজরদারি চালাচ্ছেন, যাতে লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়তে না পারে।’’
সুন্দরবনে বেড়াতে এসে পর্যটকেরা সুধন্যখালি, দোঁবাকি, সজনেখালি, নেতিধোপানি, হরিখালি, বুড়িরদাবড়ি, ঝিঙেখালি পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে যান। ঝড়ে ওই সব পর্যটনকেন্দ্রগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বেশ কিছু দিন সুন্দরবন ভ্রমণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন দফতর। সম্প্রতি আবার তা চালু হয়েছে। তবে বন্ধ আছে নেতিধোপানি পর্যটন কেন্দ্রটি। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের ২২টি ক্যাম্প অফিসের মধ্যে ২১টি অফিসের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে, সৌরবিদ্যুতের সরঞ্জাম নষ্ট হয়েছে। পানীয় জলের ট্যাঙ্ক উড়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জঙ্গল-লাগোয়া বিভিন্ন জেটিঘাট ও রাস্তা।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের ফিল্ড ডিরেক্টর সুধীরচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বনকর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন। টাকার কিছু সমস্যা রয়েছে। টাকা বরাদ্দ হলে আরও দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy