গোবর্ধনপুরে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত ঘরবাড়ি। ছবি: সমরেশ মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
পূর্ণিমার ভরা কটালের জলোচ্ছ্বাসে দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধে ধস নেমেছে। কোথাও কোথাও ফাটল দেখা দিয়েছে বাঁধে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। সেচ দফতর শনিবার থেকেই নদীবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাতের জোয়ারে গোসাবার সাতজেলিয়ায় গোমর নদীর বাঁধ, কুমিরমারিতে সারসা নদীর বাঁধ, পাখিরালয়, কালীদাসপুর, বাগবাগান, আমলামেথি সহ অন্তত কুড়িটি জায়গায় নদী বাঁধে ধস ও ফাটল দেখা যায়। সেচ দফতর জানিয়েছে, পূর্ণিমার ভরা কটালের জেরে গোসাবার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪০০০ হাজার ফুট বাঁধে ফাটল ও ধস নেমেছে।
গোসাবার কোথাও বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল না ঢুকলেও পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর গ্রাম বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ভরা কটালের জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে গত তিন দিন ধরে নোনা জল ঢুকছে গ্রামে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে প্রায় একশোটি বাড়ি। কয়েকশো বিঘা জমিও নোনা জলে প্লাবিত হয়েছে। পুকুরে নোনা জল ঢুকে মাছ মারা গিয়েছে। বেশ কয়েকটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবর্ধনপুর গ্রামের পূর্ব,পশ্চিম ও দক্ষিণে প্রায় ৬০০ মিটার নদীবাঁধ ভেঙেছে। গ্রামের দক্ষিণেই বঙ্গোপসাগর। ওই অংশে কোনও চর না থাকায় ঢেউগুলি সজোরে আছড়ে পড়ে বাঁধে। সেই কারণেই বিপত্তি। এলাকার বাসিন্দা মোহন জানা বলেন, ‘‘এ বারও বাঁধ রক্ষা করা গেল না। বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, পুকুর, চাষের জমি।’’
পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীরকুমার জানা বলেন, ‘‘গোবর্ধনপুরের দক্ষিণ অংশে বহু বার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ওই এলাকায় সমুদ্রের ঢেউয়ের দাপট থাকায় বার বার বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙা বাঁধের কিছুটা দূরে ফের কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। শীঘ্রই ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ত্রাণ সামগ্রী ও অন্য সাহায্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। সকলে নিরাপদে আছে। দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে।’’
সাগরের বেশ কয়েকটি জায়গায় কটালের জেরে বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ধবলাট শিবপুর এলাকায় ১০০ মিটার, মুড়িগঙ্গা পঞ্চায়েতের কাশতলা এলাকায় ৫০ মিটার, এ ছাড়া বঙ্কিমনগর, সুমতিনগর ও মহিষামারি এলাকায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে। যার ফলে আতঙ্কিত ওই এলাকার বাসিন্দারা। সাগর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীবাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। সেচ দফতর কিছু কিছু জায়গায় কাজ শুরু করেছে।
সাগরের বিডিও কানাইয়া কুমার রায় বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি জায়গায় নদী বাঁধে ধস দেখা গিয়েছে। সেচ দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অবিলম্বে মেরামতির কথা বলা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, সন্দেশখালি ১ ব্লকের বানতলা স্লুইস গেটের কাছে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধে প্রায় ছ’ফুট অংশ ভেঙে জল ঢুকেছে। শুক্রবার রাতে ভাটা পড়লে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের সহায়তায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়। বানতলা স্লুস গেটের কাছে এবং বয়ারমারি গান্ধার পাড়ায় নদীবাঁধ বেহাল বলে স্থানীয়েরা জানান। শনিবার পর্যন্ত সেচ দফতর এখানে কাজ শুরু করেনি বলে অভিযোগ। সন্দেশখালি ১ বিডিও সায়ন্তন সেন বলেন, “কয়েকটি জায়গায় বাঁধে ধস নেমেছে। প্রাথমিক ভাবে কিছুটা সংস্কার হয়েছে, যাতে জল না ঢোকে। সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে বাঁধ সারানোর জন্য।” সেচ দফতরের তরফে অবশ্য কবে এই বাঁধ মেরামত করা হবে তা জানানো হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy