Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধ, আতঙ্কে সুন্দরবনের গ্রাম

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির কারণে গোসাবা ব্লকের পুঁইজালি, কুমিরমারি, আমতলি, লাহিড়িপুর, কালিদাসপুর, কচুখালি, পাখিরালা, বালি ১, ২, আমলামেথি, বিরাজনগর, দুলকি, সোনাগাঁ এবং বাসন্তী ব্লকের চুনাখালি,,রামচন্দ্রখালি, ঝড়খালি, নফরগঞ্জ, বাসন্তী, পার্বতীপুর, বিরিঞ্চিবাড়ি, ত্রিদিবনগর এলাকায় নদী বাঁধে ধস নেমে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বেহাল: গোসবায় ছবিটি তুলেছেন সামসুল হুদা

বেহাল: গোসবায় ছবিটি তুলেছেন সামসুল হুদা

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোসাবা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৭:২০
Share: Save:

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ক্যানিং মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃষ্টির জন্য সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধে ধস নামায় ক্ষতি হচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে নদী বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হতে পারে, সেই আশঙ্কায় আতঙ্কিত সুন্দরবনের গোসাবা ও বাসন্তী ব্লকের মানুষ।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, আয়লা পরবর্তী সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী বাঁধ তৈরি হয়নি। জোড়াতালি দিয়ে কোনও রকমে বাঁধ মেরামত করা হয়েছে মাত্র। ভরা কোটাল ও বর্ষার সময়ে কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। এ বারও টানা বৃষ্টিতে সুন্দরবনের গোসাবা ও বাসন্তী ব্লক এলাকায় বিদ্যা, দুর্গাদোয়ানি, মাতলা, হানা, হোগল, হাতাখালি নদীর জল বেড়ে যাওয়া বিভিন্ন জায়গায় নদী বাঁধে ধস নেমে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক জায়গায় আবার স্ল্যুইস গেট খারাপ হয়ে গিয়ে বর্ষার জল বেরোতে না পেরে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

যদিও সেচ দফতর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে। কোথাও রিং বাঁধ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির কারণে গোসাবা ব্লকের পুঁইজালি, কুমিরমারি, আমতলি, লাহিড়িপুর, কালিদাসপুর, কচুখালি, পাখিরালা, বালি ১, ২, আমলামেথি, বিরাজনগর, দুলকি, সোনাগাঁ এবং বাসন্তী ব্লকের চুনাখালি,,রামচন্দ্রখালি, ঝড়খালি, নফরগঞ্জ, বাসন্তী, পার্বতীপুর, বিরিঞ্চিবাড়ি, ত্রিদিবনগর এলাকায় নদী বাঁধে ধস নেমে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক অদিতি চৌধুরী বলেন, ‘‘সমস্ত পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। সেচ দফতর ইতিমধ্যে যে সব জায়গায় নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে কাজ শুরু করেছে। কিছু স্ল্যুইস গেট খারাপ। সেগুলি মেরামত করে জল বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জীবনতলার কুঁড়িয়াভাঙা পাম্পিং স্টেশন চালু করে জল বের করা হচ্ছে। আমাদের সব দফতরের কর্মীরা তৈরি আছেন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য।’’

ইতিমধ্যে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ত্রিপল বিলি হয়েছে বলে জানান তিনি। পর্যাপ্ত ত্রিপলের ব্যবস্থা আছে বলেও আশ্বস্ত করেছেন।

ক্যানিং, জীবনতলা, গোসাবা, বাসন্তী ব্লক এলাকায় বৃষ্টির জমা জলে জমির ধান, বীজতলা জলের তলায় ডুবে গিয়েছে। অনেক জায়গায় পুকুরের জল ছাপিয়ে মাছ বেরিয়ে পড়েছে। বহু মাটির বাড়ি ভেঙেছে। বৃষ্টির জল বেরোতে না পেরে বাসন্তী ব্লক অফিস জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অফিসের কর্মীদের হাঁটুজল ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

বাসন্তীর বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ সর্দার বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় নিকাশি নালা বন্ধ করে জবরদখল হয়ে দোকান, ঘর তৈরি হয়েছে। ফলে বৃষ্টির জল বেরোতে না পেরে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। যার থেকে বাদ যায়নি ব্লক অফিসও।’’ স্থানীয় শিক্ষক প্রভুদান হালদার বলেন, ‘‘বাসন্তী,সোনাখালি সহ বিভিন্ন জায়গা জলের তলায়।জল বের হতে না পারায় জলবাহিত নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে জল বের করার ব্যবস্থা করা।’’

ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা মানছেন, সুন্দরবনের বেশ কিছু নদীবাঁধের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy