Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Sundarbans

ফের নদীবাঁধ ভাঙার আতঙ্কে সুন্দরবনবাসী

কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সমুদ্রতটে ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কটালের ক্ষত সারিয়ে না উঠতে উঠতে আবারও ক্ষতির মুখে রাজ্যের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৬
Share: Save:

বঙ্গোপসাগর উপকূলে ফের তৈরি হয়েছে দুর্যোগের আশঙ্কা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে সোমবার পর্যন্ত উপকূল এলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। সেই সঙ্গে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এ দিকে, রবিবার থেকেই শুরু হয়েছে অমাবস্যার কটাল। নিম্নচাপ ও কটালের জোড়া ধাক্কায় বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন উপকূল এলাকার বাসিন্দারা।

গত কটালেই নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগরের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধের মাটি আলগা হয়ে যায়। বেশ কয়েক জায়গায় বাঁধ উপচে ও ফাটল দিয়ে এলাকায় জলও ঢোকে। গঙ্গাসাগর কপিলমুনি আশ্রমের সামনে সমুদ্রতট, মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়া, পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর বা ঘোড়ামারা দ্বীপের নদীর পাশের এলাকায় বাঁধ বেহাল। জেলায় রবিবার বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় মহকুমা ও ব্লকস্তরে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পুলিশের তরফে কাকদ্বীপ মহকুমার উপকূল এলাকায় শনিবার থেকেই মাইকে সতর্কতামূলক প্রচার করা হচ্ছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কায় ভয়াবহ ভাঙনের কবলে রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নামখানার মৌসুনি দ্বীপ। বালিয়াড়া ও সল্টঘেরি এলাকা প্রবল ভাঙন শুরু হয়েছে। এ দিকে, কটালের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকে বাঁধে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। চিনাই নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মৌসুনি দ্বীপে প্রচুর হোম স্টে কটেজ রয়েছে। তার কয়েকটি ইতিমধ্যেই জলে তলিয়ে গিয়েছে। বাকি হোম স্টেগুলিও ক্ষতির মুখে।

অন্য দিকে, কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সমুদ্রতটে ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কটালের ক্ষত সারিয়ে না উঠতে উঠতে আবারও ক্ষতির মুখে রাজ্যের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগর। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে জেলা প্রশাসন।

এ দিকে, ইলিশের মরসুমে বার বার দুর্যোগের পূর্বাভাসে ব্যাহত হচ্ছে মাছ ধরা। সুভাষ দাস নামে কাকদ্বীপের এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘‘বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এখন ইলিশের মরসুম। কিন্তু দুর্যোগের জন্য সমুদ্রে যাওয়া যাচ্ছে না।’’

সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘নিম্নচাপ ও ষাঁড়াষাঁড়ি কটাল আছে। তাই বিভিন্ন এলাকায় খারাপ নদীবাঁধগুলির প্রশাসন নজর রাখছে। দুর্যোগ কেটে গেলে সেচ দফতর থেকে মেরামতির কাজ শুরু হবে।’’

কটালের জেরে বঙ্গোপসাগরে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে। সমুদ্র ফুলেফেঁপে উঠছে। এমনিতেই দফায় দফায় বৃষ্টির জেরেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কটালের কারণে জলস্তর বাড়তে থাকায় নদীর বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। ইতিমধ্যেই সাগর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্লক অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখানে সমস্ত বিষয়ের উপরে নজর রাখছেন আধিকারিকদের বিশেষ দল। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির মন্দির সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ব্যবসায়ী এবং পুণ্যার্থীদের জন্য রবিবার দিনভর চলে মাইকে প্রচার। সমুদ্রে না নামার জন্য প্রচার চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Sundarbans kakdwip Bay Of Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE