Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
সদ্য মেরামত হওয়া বাঁধে ধস
Dams

সামনেই কটাল, বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে বাসিন্দারা

প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফি বছর বর্ষার আগে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়। মাটি কাঁচা থাকায় নোনা জলের অল্প ধাক্কাতেই ভেঙে পড়ে।

সংস্কার: বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে পাখিরালয়ে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।

সংস্কার: বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে পাখিরালয়ে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২১ ০৫:৪১
Share: Save:

দিন কয়েকের মধ্যেই অমাবস্যার কটাল। ভরা জোয়ারে ফের ফুলে-ফেঁপে উঠবে নদী। জল আটকাতে ইতিমধ্যেই দুই জেলার ইয়াস-বিধ্বস্ত বাঁধগুলি মেরামতের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তবে এই ক’দিনে ক্ষতিগ্রস্ত সব বাঁধ মেরামত করা যাবে কিনা, তা ভেবে আতঙ্কিত উপকূল এলাকার বাসিন্দারা। তড়িঘড়ি মেরামত হলেও, কাঁচা মাটি জোয়ারের জল ধরে রাখতে পারবে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে। এর মধ্যেই আতঙ্ক বাড়িয়ে হিঙ্গলগঞ্জের একটি সদ্য মেরামত হওয়া বাঁধে ধস নেমেছে।

সোমবার রাতে হিঙ্গলগঞ্জের কালীতলা পঞ্চায়েতের সামসেরনগর বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে কালিন্দী নদীর বাঁধের প্রায় দেড়শো ফুট অং‌শে ধস নামে। স্থানীয়রা জানান, ইয়াসে ওই জায়গাতেই বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে ভেসেছিল এলাকা। পরে প্রশাসনের তরফে মাটি ফেলে মারামত করা হয়। এ দিন সেই মাটিই ফের ধসে যায়। তবে নদীতে জল কম থাকায় ধসে যাওয়া অংশ দিয়ে জল ঢোকেনি। খবর পেয়ে স্থানীয় বিধায়ক-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে আসেন। দ্রুত বাঁধ মেরামত শুরুর নির্দেশ দেন। সামনেই অমাবস্যার কটাল। কটালে নদীর জল বাড়বে হু হু করে। তার আগে বাঁধের এই অবস্থায় তাই আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। পরান সর্দার বলেন, “কয়েকদিন আগেই এই বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকেছিল গ্রামে। দ্রুত মোরামত না হলে ফের ভাসতে হবে।” ক’দিন আগেই মেরামত করা বাঁধে ফের কী ভাবে ধস নামল, সেই প্রশ্নও তুলছেন স্থানীয়রা। বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, “এলাকার মানুষের চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ইতিমধ্যেই জোর কদমে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।” হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বসিরহাট মহকুমার অনেক এলাকাতেই ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের কাজ বাকি রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

কাকদ্বীপ মহকুমার পাথরপ্রতিমা, নামখানা ও সাগর ব্লকে বহু নদী বাঁধ ভেঙেছে ইয়াসে। কোথাও কাজ চলছে, কোথাও এখনও কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, কটালের আগেই বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। তবে এত কম সময়ে এত বাঁধ মেরামত সম্ভব নয় বলেই মত স্থানীয়দের একাংশের। ফলে কটালে জল আটকানো নিয়ে আশঙ্কিত তাঁরা।

প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফি বছর বর্ষার আগে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়। মাটি কাঁচা থাকায় নোনা জলের অল্প ধাক্কাতেই ভেঙে পড়ে। আগে থেকে বাঁধ তৈরি হলে এই সমস্যায় পড়তে হয় না বলেই মত তাঁদের। নামখানার মৌসুনি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা শঙ্কর জানা বলেন, “কটালের জল আটকাতে কাঁচা মাটি দিয়ে তড়িঘড়ি বাঁধ তৈরি হচ্ছে। এই বাঁধ জল আটকাতে পারবে বলে মনে হয় না। তার উপর মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি আসছে। ওই বাঁধের উপরে বৃষ্টির জল পড়লেই নরম মাটি আলগা হয়ে যাবে। ফলে কটালে জল বাড়লে ফের ভাসা ছাড়া উপায় নেই। আগে থেকে পরিকল্পনা করে বাঁধ তৈরি হলে এই সমস্যা হত না।”

সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “ভেঙে যাওয়া সমস্ত বাঁধই কটালের আগে মেরামত করা হবে। ইতিমধ্যেই মেশিনের সাহায্য মাটি ফেলে বাঁধ সারানো শুরু হয়েছে। আশা করছি কটালের জল আটকানো যাবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Dams Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy