প্রতীকী ছবি।
আমপানের তাণ্ডবে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে, চাল উড়ে কার্যত পথই এখন ঠিকানা বারাসত ২ নম্বর ব্লকের দাদপুরের বাসিন্দা ওহিদ আলি, রাইমা, সোনাপান বিবির মতো অনেকের। ওহিদ পেশায় দিনমজুর। বাকি দু’জন পরিচারিকার কাজ করেন। নতুন করে ঘর তৈরির জন্য সরকারি সাহায্য মেলেনি এখনও। কখনও পঞ্চায়েতে ধর্না, কখনও পথে বসেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ওহিদ, রাইমা-রা। তাঁদের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের ঘনিষ্ঠদের সরকারি সাহায্য পাইয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু রাইমা, সোনাপানের মতো অসংখ্য মানুষ বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন। তাঁদের কথা শুনবে কে?
বারাসতের দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূল নেতা আসের আলি কামদুনি স্কুলের শিক্ষক। আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর বাড়িও। কিন্তু সরকারি সাহায্যপ্রাপ্তদের তালিকায় আসেরের নাম রয়েছে ৫৭ নম্বরে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি সারানোর জন্য তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার টাকা। তাঁর আত্মীয়েরাও ভেঙে পড়া বাড়ি সারাইয়ের টাকা পেয়েছেন, এমনই অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এলাকাবাসী। যদিও আসেরের বক্তব্য, ‘‘অন্য সকলের সঙ্গেই আমি আবেদন করেছিলাম। তবে টাকা ফেরত দেব বলে জানিয়ে দিয়েছি।’’
শুধু আসের নন। আমপানে যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের বদলে জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের তো বটেই, তাঁদের আত্মীয় এবং অনুগামীদেরও ঘর তৈরির টাকা পাইয়ে দিচ্ছেন এমন অভিযোগে প্রায় রোজই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় সরকারি অফিস ঘেরাও, পথ অবরোধ চলছে। আরও অভিযোগ, ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে বাড়ি মেরামতির মজুরি হিসেবে জব কার্ডের মাধ্যমেও পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনায় সম্পূর্ণ এবং আংশিক মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা পাঁচ লক্ষেরও বেশি। এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ১৫ হাজার মানুষ ঘর তৈরির টাকা পেয়েছেন। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির মালিকদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দাদপুরের পাশাপাশি শাসন, কদম্বগাছি, দেগঙ্গা, দত্তপুকুর, বামনগাছিতে শাসক দলের ঘনিষ্ঠদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে চলছে বিক্ষোভ।
গাংনিয়ার বাসিন্দা জাকির মল্লিক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সদস্যেরা শুধু তাঁদের লোকেদের টাকা পাইয়ে দিচ্ছেন। তাই বিডিও সাহেবের কাছে বাড়ি তৈরির সাহায্যের আবেদন নিয়ে এসেছি।’’ নানা অভিযোগ নিয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে ধরেননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা যাতে সাহায্য পান, প্রশাসন সব রকম ভাবে চেষ্টা করছে। বাড়ি তৈরির টাকা নিয়ে অভিযোগ এলে তদন্ত করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy