রাজকুমার নায়েক।
উত্তরকাশীতে সুড়ঙ্গে আটকে পড়েও অবশেষে পরিত্রাণ পেয়েছেন এ রাজ্যের তিন শ্রমিক। তবে ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে পাথরপ্রতিমার বাড়ি ফিরল রাজকুমার নায়েকের নিথর দেহ।
এই ঘটনায় এ রাজ্যের কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল-বিজেপি। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সমীরকুমার জানা বলেন, ‘‘কেন্দ্র যদি একশো দিনের কাজের টাকা ছেড়ে দিত, তা হলে এমন ঘটনা ঘটত না।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা অশোককুমার জানার পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূল সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে। কারণ, তারা গরিবের হকের টাকা চুরি করবে, হিসেব দেবে না।’’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন পাথরপ্রতিমার জি প্লট পঞ্চায়েতের বুড়াবুড়ি তট এলাকার বাসিন্দা রাজকুমার। সম্প্রতি তিরুঅনন্তপুরম এলাকায় ঠিকাদারি সংস্থার হয়ে কাজ করছিলেন। স্থানীয় আরও কিছু যুবকও ছিলেন ওই কাজে। মঙ্গলবার দুপুরে পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য মাটি কেটে খাদ কাটা হয়েছিল। পাশেই কাজ করছিলেন রাজকুমার। হঠাৎ ধস নামে গর্তে। পা পিছলে পড়ে সেখানেই চাপা পড়ে যান বছর তিরিশের রাজকুমার। অন্য শ্রমিকেরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে দেহ পৌঁছেছে। কান্নার রোল ওঠে। পাঁচ এবং দুই বছরের ছেলে রাজকুমারের। রাজকুমারই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। পরিজনেরা জানান, আর্থিক অনটন মেটাতে কিশোর বয়স থেকে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন রাজকুমার। স্ত্রী শ্রাবণী বলেন, ‘‘সংসারটা ভেসে গেল। কী ভাবে চলবে কে জানে! দুটো ছেলেকে পড়াশোনা করাব কী করে!’’
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২৫ ডিসেম্বর বাড়ি ফেরার কথা ছিল রাজকুমারের। বাড়ির পাশে বনবিবি উৎসব পালিত হয়। প্রতি বছর এই সময়ে রাজকুমার বাড়ি ফিরে স্ত্রী-ছেলেদের নিয়ে উৎসবে যোগ দিতেন। আর কখনও সেই সুযোগ মিলবে না বলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্ত্রী। রাজকুমারের বাবা সুব্রত বলেন, ‘‘অনেক বছর ধরে ছেলেটা বাইরে কাজে যাচ্ছে। হঠাৎ দুর্ঘটনায় প্রাণটা হারাল।’’
কিছু দিন আগেই সাগরের কোম্পানিছাড় নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয়কুমার মাইতি অসমের করিমগঞ্জে শ্রমিকের কাজে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। ফের এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুতে অনেকেই ক্ষুব্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy