—প্রতীকী চিত্র।
ভাগাড় উচ্ছেদের দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ-অবস্থানে বসা বাসিন্দাদের আশা ছিল, এলাকায় সাংসদ এলে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু শনিবার দুপুরে নির্দিষ্ট সময় পরেও তাঁর দেখা মিলল না। পরে বাসিন্দারা জানলেন, ওই রাস্তা দিয়ে যে বৈঠকে যাওয়ার কথা ছিল সাংসদের, তা আচমকা বাতিল হয়েছে।
পানিহাটি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুরে ন’দিন ধরে চলছে স্থানীয়দের বিক্ষোভ-অবস্থান। দাবি, জনবসতির মধ্যেই পাহাড়ের আকার নেওয়া ভাগাড়টিকে অন্যত্র সরাতে হবে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ওই ভাগাড়ের কাছে একটি হোমিয়োপ্যাথি কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। তার বার্ষিক বৈঠকে এ দিন যোগ দেওয়ার কথা ছিল সাংসদ সৌগত রায়ের। তাই সকাল থেকেই সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে রাস্তায় এসে বসেছিলেন স্থানীয়েরা। রান্না বন্ধ করে রাস্তায় বসেন মহিলারাও। কারণ তাঁরা চেয়েছিলেন, সাংসদ ফেরার সময়ে তাঁর কাছে জানতে চাইবেন, এই ভাগাড়-যন্ত্রণা আর কত দিন সহ্য করতে হবে। অন্যত্র বিকল্প ভাগাড় তৈরির জন্য প্রায় ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও সেই কাজের কী হল, কেন মুখ্যমন্ত্রী শিলান্যাস করার পরেও কাজ এখনও এগোয়নি— সেই প্রশ্নও তুলবেন স্থানীয়েরা।
দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ভাগাড় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া, ভাগাড় উচ্ছেদ কমিটির আহ্বায়ক শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংসদ চেষ্টা করেছেন, অস্বীকার করছি না। কিন্তু বার বার সব প্রচেষ্টা কেন বিফল হচ্ছে, জানতে চাইতাম। তবে পুলিশও তাদের তদন্ত রিপোর্টে আমাদের সমস্যা যে সত্য, তা তুলে ধরেছে।’’ তিনি আরও জানান, সাংসদের উদ্যোগে ২০১৮ সালের ১২ জুন কেন্দ্র জানিয়েছিল যে, নতুন ভাগাড় প্রকল্পের জন্য প্রথম ধাপে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। ২০২০-তে পানিহাটি পুরসভার সঙ্গে বৈঠকের সময়ে বাসিন্দারা জানতে পারেন, রাজ্যও ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যদিও তার পরেও বিকল্প ভাগাড়ের কাজ কখনওই হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রীতি পাল বলেন, ‘‘আমরা আর শুধু কথা শুনতে রাজি নই। এ বার কাজ চাই। তাতে যদি আবার পুলিশ গ্রেফতার করে, লাঠিপেটা করে তো করুক।’’ বিক্ষোভকারীরা জানাচ্ছেন, ভাগাড়ের আশপাশের এসবি-টাউন-১এ, শিমূলতলা, শিমলানগর, পশ্চিমপল্লি, অরুণাচলের মতো বিভিন্ন এলাকাও ভাগাড়ের দূষণে জর্জরিত। ভাগাড়ের কারণে এলাকায় ঘরের জানলা-দরজা বন্ধ রাখতে হয়, বর্ষার জমা জলে ভাগাড়ের বর্জ্য মিশে দুঃসহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মিতালি মারিক নামে এক স্থানীয়ের কথায়, ‘‘লজ্জায় আত্মীয়দের বাড়িতে আসতে বলতে পারি না। পেটের রোগ তো লেগেই রয়েছে।’’
এ দিন রামচন্দ্রপুরে গিয়ে দেখা গেল, ভাগাড়ে যাওয়ার পথে ত্রিপলের ছাউনি টাঙিয়ে বসে রয়েছেন স্থানীয়েরা। সকলে মিলে চাঁদা দিয়ে আয়োজন করেছেন নিরামিষ খাবারের। এই বিক্ষোভের জেরে পানিহাটির জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ বন্ধ হয়ে থাকলেও অবশ্য জোর করে বিক্ষোভ তোলার পক্ষে নন সাংসদ। তিনি জানান, মহিষপোতায় পুরসভার যে জমিতে ভাগাড় হওয়ার কথা ছিল, তা থেকে কিছুটা দূরের বাসিন্দাদের আপত্তি আছে বলে জানিয়েছেন খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাই ভাগাড় সেখানে সরানো যায়নি। সৌগত বলেন, ‘‘রাজ্য টাকা দিলেও জমি দিতে পারছে না। পুরসভাও নতুন জমি পাচ্ছে না। আবার হাই কোর্টের নির্দেশে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারের প্রমোদনগরেও আর নতুন জায়গার আবর্জনা ফেলা যাবে না। তাই কী যে করা হবে, বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy