বয়রা পঞ্চায়েতের প্রধান অসিত মণ্ডল। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি পাইয়ে দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। বাগদা ব্লকের বয়রা পঞ্চায়েতের ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ওই পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্যও। ওই সদস্যের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন প্রধানও। ঘটনাকে হাতিয়ার করে শাসক দলের দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধী বিজেপি।
বাগদার বয়রা পঞ্চায়েতের ওই প্রধান, তৃণমূলের অসিত মণ্ডলের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর অভিযোগ, পাকা বাড়ি পাওয়ায় আশায় তাঁরা প্রধান ও পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে টাকা দিয়েছিলেন। এখন তাঁরা দেখছেন, আবাস যোজনার তালিকায় তাঁদের নাম নেই। সনাতন দাস নামে গ্রামের এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘প্রধান বলেছিলেন ঘর পেতে হলে টাকা দিতে হবে। সেই মতো টাকা দিয়েছিলাম। অথচ আবাস যোজনার তালিকায় আমাদের নাম নেই। আমরা টাকা ফেরত চাই।’’ চৈতন্য দাস নামে আর এক গ্রামবাসীও দাবি করেছেন, তিনিও পাকাবাড়ি পেতে টাকা দিয়েছেন। হয় পাকাবাড়ি অথবা টাকা ফেরত চাইছেন তাঁরা।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, প্রধানের পাশাপাশি তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সদস্য দিলীপ দাসও টাকা তুলেছিলেন। সে কথা স্বীকার করেছেন দিলীপ নিজেও। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানের নির্দেশেই মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলাম। প্রধানকে টাকা দিয়েছিলাম।’’ দলের প্রধানের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলে দিলীপ বলেন, ‘‘দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছি গরিব মানুষের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করুন। নয়তো তাঁদের পাকাবাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘দলীয় ভাবে অভিযোগের তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ সত্যি হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশ্বজিতের কাছে প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।
বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের গোপা রায়ের কাছেও প্রধানকে টাকা দিয়ে বাড়ি না পাওয়ার লিখিত অভিযোগ করেছেন অনেকে। গ্রামবাসীর অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন গোপাও। তিনি বলেন, ‘‘প্রধান আবাস যোজনায় ঘর দেওয়ার নাম করে ওই প্রধান কিছু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। কেউ কেউ সুদে টাকা ঋণ নিয়ে প্রধানকে টাকা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।’’
ঘটনাকে হাতিয়ার করে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী বিজেপি। বাগদার বিজেপি নেতা অমৃতলাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রধান পাকা বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে গরিব মানুষদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন এই অভিযোগ আমরা অনেক দিন ধরেই তুলছি। এ বার তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যও একই অভিযোগ তুলেছেন। আমরা চাই প্রধানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হোক।’’
তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে প্রধান অসিত মণ্ডল বলেন, ‘‘টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হয়েছে।’’ দলীয় সহকর্মী, পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপ দাসের অভিযোগ অস্বীকার করে অসিতের পাল্টা দাবি, ‘‘ওই পঞ্চায়েত সদস্য গত দু’বছর পঞ্চায়েতে আসেন না। নানা উপায়ে মানুষের থেকে টাকা তোলেন। নিজের পিঠ বাঁচাতে এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy