Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

ঝড়বৃষ্টি হলে আশ্রয় নিতে হয় পড়শির বাড়ি

কুলপির বেলপুকুর পঞ্চায়েতের ট্যাংরাচর মণ্ডলপাড়া হুগলি নদী-লাগোয়া প্রত্যন্ত এলাকা। প্রায় দেড় হাজার মানুষের বাস। অধিকাংশই দিনমজুর, মৎস্যজীবী।

আস্তানা: এখানেই মাথা গুঁজে থাকেন রহমতুল্লারা। নিজস্ব চিত্র

আস্তানা: এখানেই মাথা গুঁজে থাকেন রহমতুল্লারা। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
কুলপি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৪
Share: Save:

হুগলি নদীর অদূরে রহমতুল্লা মণ্ডলের ছিটে বেড়ার দেওয়াল, খড়-টালির ছাউনির ঘর। জোরে বৃষ্টি হলেই বুক কাঁপে সে ঘরের বাসিন্দাদের। এই বুঝি ভেঙে পড়ল ঘর!

কুলপির ট্যাংরাচর মণ্ডলপাড়ার ওই বাসিন্দা জানালেন, এমন দুর্যোগে সপরিবার আশ্রয় নেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও সরকারি আবাস যোজনার ঘর পাননি বলে তাঁর অভিযোগ।

কুলপির বেলপুকুর পঞ্চায়েতের ট্যাংরাচর মণ্ডলপাড়া হুগলি নদী-লাগোয়া প্রত্যন্ত এলাকা। প্রায় দেড় হাজার মানুষের বাস। অধিকাংশই দিনমজুর, মৎস্যজীবী। রহমতুল্লার স্ত্রী সাহানা বিবি জানালেন, স্বামী দর্জির কাজ করেন। কোনও মতে সংসার চলে। বাড়ি সারানোর টাকা নেই। আমপানে ঘর প্রায় অর্ধেক ডুবেছিল। সে সময়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রতিবেশীর পাকা বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িটা পাকা হলে নিশ্চিন্তে থাকতে পারতাম। আবাস যোজনার বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু নাম নথিভুক্ত হয়নি।’’

আক্রম মণ্ডল, আনাস মণ্ডলের বাড়ির অবস্থাও শোচনীয়। ওই পঞ্চায়েতের রাঙাফলা গ্রামের নূর মহম্মদ পেয়াদার বাড়ি মাটির দেওয়াল, অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া। বার বার আবাস যোজনার জন্য আবেদন করেও নাম নথিভুক্ত হয়নি বলে জানালেন।

ছেলে নাজিরউদ্দিন পেয়াদার অভিযোগ, পঞ্চায়েতের যে সব নেতার পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁরা আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন। অথচ, তাঁদের মতো দরিদ্র মানুষের নামই ওঠেনি তালিকায়।

করঞ্জলি পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা আমিন মণ্ডলেরও মাটির দেওয়ালের উপরে অ্যাসবেস্টস, ত্রিপলের ছাউনি। তিনি জানালেন, পুরনো তালিকায় তাঁর নাম ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় বাদ গিয়েছে। তার কারণ জানেন না গৃহকর্তা।

ওই গ্রামের মোস্তাক মণ্ডল মাটির দেওয়াল, খড়ের ছাউনির ভাঙাচোরা কুঁড়েঘরে থাকেন। পাঁচ জন সদস্য পরিবারে। সমীক্ষার পরে তাঁর নামও তালিকায় ওঠেনি বলে জানালেন মোস্তাক।

বেলপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমা বিশ্বকর্মা বলেন, ‘‘২০১৮ সালে ব্লক প্রশাসন থেকে সমীক্ষা করে মাটির ঘরের তালিকা তৈরি করেছিল। তারপরে ইয়াস, আমপানে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙেছিল। তাঁরা কেউ কেউ ধারদেনা করে পাকা বাড়ি করেছেন। অথচ তাঁদের নাম তালিকায় থেকে গিয়েছে। তবে যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁদের অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও যদি কেউ বাদ পড়ে থাকেন, নিশ্চয়ই পরে তাঁদের নাম আবাস যোজনায় নথিভুক্ত করা হবে।’’ করঞ্জলি পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তনু কয়াল জানান, চার বছর আগে সরকারি ভাবে সমীক্ষা চালিয়ে আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। সেখানে পঞ্চায়েতের ভূমিকা ছিল না। কেউ অনিয়মের অভিযোগ করলে তা ঠিক নয়। বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘যাঁরা প্রকৃত প্রাপক, তাঁদের নাম নথিভুক্ত হবে। পাকা বাড়ি থাকলে তাঁদের নাম কেটে বাদ দেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Yojana Kulpi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE