জমা জল ভেঙে লক্ষ্মীপ্রতিমা নিয়ে চলেছেন মহিলা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
বৃষ্টির জলে ডুবেছিল ঘর, বাড়ি, জমির ফসল। বেহাল নিকাশির জেরে এখনও সেই জল নামেনি। ফলে এক বুক জল ঠেলেই যাতায়াত করতে হচ্ছে দেগঙ্গার দক্ষিণ পারপাটনা গ্রামের কয়েক ঘর মানুষকে। ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমপানের পর জলমগ্ন হয়ে পড়ে হাবড়া সংলগ্ন দেগঙ্গার চাকলা এবং কলসুর পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা। তারপর ফের বৃষ্টিতে কোথায় হাঁটু কোথাও বা বুক সমান জল জমে পারপাটনা, নিকেরআটি, বেলিয়াখালি, বক্সিরআটি, কলসুর, কামদেবকাটিতে। ঘরছাড়া হয়ে মানুষ আশ্রয় নেন ত্রাণশিবিরে। বেশিরভাগ জায়গায় জল নামলেও এখনও দক্ষিণ পারপাটনায় জলবন্দি বেশ কয়েকটি পরিবার। ঘর থেকে বাইরে আসার একমাত্র উপায় ডিঙি নৌকা।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব দাস, শহর আলি, খোদাবক্স মণ্ডল, মুকুল বিশ্বাসরা জানান, বেলিয়াখালি, পারপাটনা এলাকায় হাজার হাজার বিঘা জমিতে ধান,পাট এবং আনাজ চাষ হয়। বৃষ্টির জল চাতরা সেতুর নীচ দিয়ে পদ্মা খাল হয়ে যমুনা নদীতে গিয়ে পড়ত। কিন্তু বছরের পর বছর পদ্মা খাল সংস্কার না হওয়ায় প্রতি বর্ষায় এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। নষ্ট হয় ফসল। এ বছরও বহু বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
কলসুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গফফার আলি মণ্ডল বলেন, “একদিকে জলা ও নিচু জমি, তার উপর পদ্মা খালের বেহাল জল নিকাশি ব্যবস্থার জন্যই এই বিপত্তি। নিকাশির উন্নতিতে অনেক অর্থের প্রযোজন। বিষয়টি জেলা স্তরে জানানো হয়েছে। প্লাবিত এলাকার মানুষকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, “নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়ে রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের প্রতিশ্রুতিই সার। প্রতিবছরই বর্ষাকালে একগলা জলে কাটাতে হয়।”
সম্প্রতি এলাকায় গিয়ে দেখা গেল জলে ডোবা গ্রামে লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি চলছে। এক বুক জল ঠেলে লক্ষ্মী প্রতিমা কোলে নিয়ে বাড়িতে আসছেন এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা গীতা বিশ্বাসের কথায়, “১৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে এক বিঘা ছিল গোবিন্দভোগ ধান। সমস্ত ধান জলে পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রতি বছর নতুন ধান ঘরে ওঠার পরে গোবিন্দভোগ চালের পায়েস রান্না করে লক্ষ্মীপুজো করা হয়। কিন্তু এ বার তা আর সম্ভব হচ্ছে না।”
দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, “কিছু নিচু জায়গার জল পাম্প লাগিয়েও সরানো যাচ্ছে না। তবে উঁচু জায়গার জল সরানো গিয়েছে। সমস্যার সমাধানের জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান করে জেলাস্তরে পাঠানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy