ভাঙাচোরা জায়গায় চলছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ছবি: দিলীপ নস্কর
অ্যাসবেস্টস ভাঙা। বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। ভিজে যায় জরুরি নথি-সহ চিকিৎসার সরঞ্জাম। একটি বেহাল ক্লাব ঘরে চলছে মগরাহাটের তালদি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিভাগীয় দফতরে আবেদন করেও কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মগরাহাট ২ ব্লকের উড়েল চাঁদপুর পঞ্চায়েতে ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চলছে ভাড়া নেওয়া একটি ক্লাব ঘরে। ইটের দেওয়াল অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ওই ক্লাব ঘরটি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। জানলার পাল্লা ভেঙে ঝুলে রয়েছে। ভেঙেছে দেওয়াল। এখনও রয়ে গিয়েছে মাটির মেঝে। ঝড়-বৃষ্টি হলেই জল ঢুকে পড়ে ঘরের মধ্যে। দরকারি কাগজ, ওষুধপত্র ভিজে যায়। রোগীর ভিড় থাকলে তাঁদের দাঁড়ানোরও কোনও জায়গা থাকে না। পাশেই একটি গুমটি অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ছিল। তা আমপানে ভেঙে পড়েছে। পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। দু'জন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে এক জন ছুটিতে রয়েছেন প্রায় ৬ মাস। একাই একজন সামলাচ্ছেন স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ। প্রত্যন্ত এলাকার ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভর করে আছেন পঞ্চায়েত এলাকার আবাদচাঁদপুর, ঈশ্বরীপুর, তিলকপাত্রেরচক, ক্ষুদিরাম মণ্ডলেরচক, তালদি ও মল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দারা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মূলত প্রসূতি ও শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে প্রতিনিয়ত ৪০০ শিশু, প্রসূতি মিলিয়ে প্রায় ৬০ জন পরিষেবা পান ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে। ০ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত শিশুদের সমস্ত রকমের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। এলাকার আশাকর্মীরা মা ও প্রসূতিদের নিয়ে এসে এখানেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তা ছাড়া যক্ষা-সহ নানা রোগের পরীক্ষা করে নিয়মিত ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর অনেকেই নির্ভর করে রয়েছেন। এরপরেও এর এমন অবস্থা কেন? অবিলম্বে এই কেন্দ্রের পরিকাঠামো ঠিক করা হোক। তা হলে উপকৃত হবেন এলাকার মানুষ। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী মিনতি অড়াং বলেন, ‘‘কী করব। নিরুপায় হয়ে এই বেহাল পরিকাঠামোর মধ্যে কাজ করছি। প্রায় বৃষ্টির জল ঢুকে কাগজপত্র নষ্ট করে দিচ্ছে। অথচ সমস্ত রকমের শারীরিক পরীক্ষার যন্ত্রপাতি এখানে রয়েছে। ক্লাবটি সংস্কারের জন্য বিভাগীয় দফতরের আধিকারিকদের একাধিকবার জানানো হয়েছে।’’
মগরাহাট ২ বিএমওএইচ মহম্মদ গউস আলম বলেন, ‘‘ওই ক্লাবের কর্তৃপক্ষকে ঘরটি সারানোর জন্য বলা হয়েছিল। কিন্ত তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফের স্থানীয় পঞ্চায়েতে ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কার করার ব্যবস্থা নেব। তবে জমির অভাবে ওই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য নতুন করে ভবন তৈরি করা যাচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy