কসাইয়ের ব্যবহার করা চপার দিয়ে এক কোপে ধড় থেকে মুন্ডু আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে যুবকের মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধারের পর পরীক্ষা করে এমনটাই অনুমান করছেন চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যে ভিসারা টেস্টের জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে। দেহ উদ্ধারের সময় পাশে মদের গেলাস পাওয়া গেলেও যুবকের শরীরে অ্যালকোহলও পাওয়া যায়নি। এটা থেকে পুলিশ মনে করছে, খুনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এবং একাধিক খুনি জড়িত থাকতে পারেন দত্তপুকুরের ঘটনায়। অন্য দিকে, যুবকের বাঁ হাতের ট্যাটুর ছবি আশপাশের থানাগুলিতে পাঠিয়েছিল দত্তপুকুর থানার পুলিশ। সেই দেখে গাইঘাটা থানা এলাকা থেকে এক মহিলা মর্গে এসেছিলেন। তাঁর স্বামী বেশ কিছু দিন ধরে নিখোঁজ। তাঁর হাতেও ট্যাটু ছিল। তবে দেহ দেখার পর ওই মহিলা নিশ্চিত, দেহটি তাঁর স্বামীর নয়। প্রায় একই রকম হলেও এত বড় উল্কি তাঁর স্বামীর হাতে নেই।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার ছোট জাগুলিয়ার মালিয়াকুর বাজিতপুর এলাকার একটি ফাঁকা জমিতে মুন্ডুহীন দেহ দেখতে পান কৃষকেরা। জমির পাশে পড়ে ছিল দেহটি। গোটা শরীরে ক্ষতচিহ্ন। উপড়ে নেওয়া হয়েছিল যৌনাঙ্গ। মৃতের হাত-পা বাঁধা ছিল। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা মদের গ্লাস, চিপ্সের প্যাকেটও খুঁজে পায় পুলিশ। শুরু হয় কাটা মুন্ডুর খোঁজ। তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করা হয়। খালে ডুবুরি নামানো হয়। কিন্তু বুধবার দুপুর পর্যন্ত কাটা মুন্ডুর হদিস মেলেনি। এর মধ্যে প্রাথমিক ভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, অত্যন্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা থেকে মুন্ডু কাটা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, কসাই যে রকমের অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে, সেই রকমের অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন, এক কোপে দেহ থেকে মুন্ডু আলাদা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
খুনের কারণ কী? পুলিশ মনে করছে, প্রেমজনিত কারণে খুন হতে পারে। আবার অর্থ সংক্রান্ত কোনও বিবাদও থাকতে পারে। পুরনো শত্রুতার জেরও হতে পারে। সব ক’টি বিষয় মাথায় রেখে তদন্তকারীরা এগোচ্ছেন। অন্য দিকে, অজ্ঞাতপরিচয় দেহ শনাক্ত করতে বিভিন্ন থানায় যুবকের বাঁ হাতের ছবি পাঠিয়েছিল দত্তপুকুর থানার পুলিশ। মৃতের বাম হাতে দু’টো উল্কি আছে। একটি ‘লভ সাইন’ এবং আর একটিতে ইংরেজি হরফে লেখা ‘বি’। ওই ছবি দেখে গাইঘাটা থেকে জনৈক হজরত লস্করের স্ত্রী এসেছিলেন মর্গে। তবে দেহ দেখার পরে তিনি জানান, সেটি তাঁর স্বামীর নয়।