Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Social Media

Social Media: সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে স্কুল ছাত্রীদের তালিম

করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এই সময়ে অনলাইন ক্লাসের জন্য ছেলেমেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছেন বাবা-মায়েরা।

উদ্যোগ: ছাত্রীদের সচেতন করছে পুলিশ।

উদ্যোগ: ছাত্রীদের সচেতন করছে পুলিশ। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সীমান্ত মৈত্র  
হাবড়া শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৩১
Share: Save:

রাস্তায় বেরোলে অনেক সময়ে অনেকে বিরক্ত করে কাকু, কী করব? মোবাইলে ফোন করে অনেকে বাজে বাজে কথা বলে, খুব খারাপ লাগে। লটারিতে টাকা জিতেছি বলে ফোন পেয়েছি। খুব ভয় ভয় করে।

ছাত্রীদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরে এমন নানা কথা পুলিশকে জানাল তারা। প্রয়োজন মতো পরামর্শ দিলেন পুলিশকর্তারা। সমস্যা মনে হলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলে গেলেন।

করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এই সময়ে অনলাইন ক্লাসের জন্য ছেলেমেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছেন বাবা-মায়েরা। তাতে অনেক ক্ষেত্রেই খারাপ প্রভাব পড়েছে। ফোন হাতে পেয়ে পড়ুয়াদের অনেকে অনলাইন গেমে বুঁদ হয়েছে। ফেসফুস, হোয়াটসঅ্যাপে সময় কাটাচ্ছে অনেক বেশি। তাতে বেড়েছে বিপদ। অভিভাবকদের না বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে অনেক ছাত্রী। আর্থিক প্রতারণার ফাঁদেও পড়েছে কেউ কেউ।

এ সবের পরিপ্রক্ষিতেই স্কুলছাত্রীদের সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করা শুরু করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার হাবড়া থানায় বেশ কিছু স্কুলছাত্রী ও শিক্ষিকাদের ডাকা হয়েছিল। হাবড়ায় আটুলিয়া নেতাজি আদর্শ বিদ্যাপীঠের কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতাভুক্ত মেয়েরা থানায় এসেছিল। তাদের নিয়ে শিবির করেন পুলিশ অফিসারেরা।

বারাসত পুলিশ জেলার সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ জেলার বিভিন্ন স্কুলের মেয়েদের নিয়ে এ রকম শিবির করা হবে। তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার ভাল এবং খারাপ দিক সম্পর্কে হাতেকলমে বোঝানো হবে।”

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সমাজে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা চক্রের দাপট বাড়ছে। সেই ফাঁদ থেকে বাদ যাচ্ছে না নাবালিকারাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো আইডি তৈরি করে বন্ধুত্বের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। এ সব নিয়েই বোঝানো হয়েছে ছাত্রীদের। নাবালিকাদের বিয়ে কী ভাবে বন্ধ করা সম্ভব, তা-ও বোঝানো হয়েছে।

ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে যদি অচেনা কেউ বন্ধুত্ব করতে চায়, তারা যেন সেই বন্ধুত্বের আবেদন গ্রহণ না করে— সে ব্যাপারে বোঝানো হয়েছে মেয়েদের। পুলিশ আধিকারিক সকলকে সাবধান করে জানান, অনেক সময়ে এমন অনেক লিঙ্ক আসে, বলা হয় আর্থিক পুরস্কার জিতেছেন। কেউ যেন ভুল করেও ওই সব লিঙ্কে ক্লিক না করে। এ সব আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ।

এ দিন হাবড়া থানার আধিকারিকেরা মেয়েদের থানার বিভিন্ন বিভাগ ঘুরিয়ে দেখান। কী ভাবে পুলিশ কাজ করে তা-ও দেখানো হয়। কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটলে কী কী ধারায় মামলা দায়ের করা হয়, কী ধরনের শাস্তির বিধান আছে— ছাত্রীদের তা জানানো হয়েছে। পথে বেরিয়ে বা বাড়িতে আচমকা কেউ কোনও বিপদে পড়লে কী ভাবে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, থানায় কর্তব্যরত ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে কী সহযোগিতা পাওয়া যায়— তা ছাত্রীদের বোঝানো হয়েছে।

হাবড়া থানার আইসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, “এফআইআর বা জেনারেল ডায়েরি কী, কোন কোন ঘটনায় জেনারেল ডায়েরি বা এফআইআর করা হয়, তা মেয়েদের জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, ১৮ বছরের নীচে তারা যেমন বিয়ে করবে না, তেমনই বাড়ি থেকে বিয়ের চেষ্টা হলে তারা যেন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পথে বেরিয়ে ইভটিজিংয়ের সামনে পড়লে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।”

এ দিনের শিবিরে এসে খুশি ছাত্রীরা। প্রিয়া দাস নামে দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া বলে, “বিপদে পড়লে পুলিশ যে আমাদের ভরসার জায়গা, তা জানতে পারলাম। পুলিশ সম্পর্কে ভীতি কেটে গেল। বুঝলাম, পুলিশকাকুরা বন্ধুর মতো।” শিক্ষিকা বাসন্তী মজুমদার বলেন, “অনলাইন ক্লাস চলার সময়ে স্কুলের কয়েকটি মেয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে বিপথগামী হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সে সম্পর্কে এ দিন পুলিশের পক্ষ থেকে ছাত্রীদের বোঝানো হয়েছে। এদিন আমি এবং ছাত্রীরা যা শিখতে পারলাম, তা স্কুলের অন্য পড়ুয়াদের মধ্যে ছড়িয়ে দেব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Social Media awareness police Students Covid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy