জয়নগরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশকর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তবে কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে, কারা ওই যুবককে মেরেছেন, তা এখনও খোলসা করে জানানো হয়নি পুলিশের তরফে। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এলাকায় ইতিমধ্যে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ধান ক্ষেতে ঢুকেও তল্লাশি করছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার ভোরে জয়নগরের তৃণমূল নেতা তথা বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য এবং অঞ্চল প্রধান সইফুদ্দিন লস্করকে খুন করা হয়। নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, মোট চার জন দুষ্কৃতী তাঁকে মারতে এসেছিলেন। একটি গুলি সইফুদ্দিনের কাঁধে এসে লাগে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এই খুনের জন্য সিপিএমের দিকে আঙুল তুলেছেন। শাসকদলের নেতা, কর্মী এবং বিক্ষুব্ধ জনগণ বামনগাছির সিপিএম প্রভাবিত দোলুয়াখাঁকি নস্কর পাড়া এলাকায় চড়াও হলে এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বহু সিপিএম কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কিছু বাড়ি। ওই এলাকা ছেড়ে আতঙ্কে পালিয়ে যান পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূল সমর্থকদের দাবি, এক দুষ্কৃতীকে তাঁরা পিটিয়ে খুন করেছেন। আর এক জন তাঁদের মার খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা পলাতক।
বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এক জনকে ইতিমধ্যেই আটক করেছি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা তদন্তের পরেই বোঝা যাবে।’’
এলাকায় ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অনেকে ২০২২ সালের বীরভূমের বগটুইকাণ্ডের তুলনা টেনেছেন। তা নিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘বগটুইয়ের মতো ঘটনা এটা নয়। এখানে কারও পুড়ে মৃত্যু হয়নি। আমরা দ্রুত পদক্ষেপ করেছি। ১৫-১৬টি বাড়ি জ্বলেছে। তার মধ্যে কয়েকটি গোয়ালঘর। খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। কারা আগুন লাগিয়েছে, আমরা সব তদন্ত করে বার করব। সকলকে ধরব। সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকুন।’’ যদিও পুলিশের সামনে বাড়িতে আগুন লাগানো বা দমকলের গাড়ি আটকানোর অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সইফুদ্দিনকে খুনে অভিযুক্ত দুই দুষ্কৃতী এলাকার ধান ক্ষেতে লুকিয়ে পড়েন। পুলিশ সেই ধান ক্ষেত ঘিরে ফেলে। শুরু হয় তল্লাশি। কুলতলি থানার পুলিশ বাহিনী ধান ক্ষেতে তল্লাশি চালিয়েছে। তবে কাউকে ধরা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাস্থলে আসেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত এবং ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) আকাশ মাঘারিয়া। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ জেলার সুপার, জয়নগর থানার আইসির সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। সিদ্ধিনাথ বলেন, ‘‘এক জন ধরা পড়েছে। একটা মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে আমরা সিআইডির সাহায্য নিচ্ছি। আশা করি যাঁরা দোষী, শীঘ্রই তাঁদের ধরতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy