(বাঁ দিক থেকে) ‘মাস্টারমাইন্ড’ আনিসুর লস্কর, নিহত তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর এবং ‘বড় ভাই’ আলাউদ্দিন সাঁপুই। —নিজস্ব চিত্র।
ক্রমশ খুলছে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনার জট! পুলিশ সূত্রে খবর, জয়নগরকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ আনিসুর লস্কর নামে এক ব্যক্তি। তিনি দলুয়াখাকি গ্রামেরই বাসিন্দা। নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, সেখানেও নাম রয়েছে আনিসুরের। পাশাপাশি, পুলিশ সূত্রে খবর, জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল শেখ যে ‘বড়ভাই’-এর কথা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম আলাউদ্দিন সাঁপুই। তিনি মন্দিরবাজার থানা এলাকার টেকপাঁজা গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় আলাউদ্দিন পরিচিত সিপিএম নেতা হিসাবে।
তদন্ত চলাকালীন পুলিশ জানতে পেরেছে, যাঁর বাড়িতে লুকিয়ে থেকে ধৃত শাহরুল তৃণমূল নেতার গতিবিধির দিকে নজর রাখছিল, তিনি চালতাবেড়িয়ার বাসিন্দা। নাম, মোতালেফ। তিনিও এলাকায় সিপিএম কর্মী হিসেবেই পরিচিত। খুনের সময় যে বাইক ব্যবহার করা হয়েছিল, তা মসিবুর রহমান লস্করের নামে। তাঁর পরিবারও সিপিএমের সমর্থক। এঁরা প্রত্যেকেই ঘটনার পর থেকে বাড়িছাড়া। প্রত্যেকের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
সইফুদ্দিন খুনের পিছনে যে ভাড়াটে খুনি রয়েছে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন তদন্তকারীদের একাংশ। খুনের আগে রীতিমতো পুরো এলাকা সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়। সবটাই পরিকল্পনামাফিক। আততায়ীদের গুলি করার দিনক্ষণ এবং অপারেশনের ধরন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের নেপথ্যে কোনও ‘পাকা মাথা’ রয়েছে। তবে এই ‘পাকা মাথা’ যে নাসিরই, তা খোলসা করেনি পুলিশ। সূত্রের খবর, এর আগে তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছিলেন জয়নগরকাণ্ডের ‘পাকা মাথা’ আদতে নাসির হালদার নামে টেকপাঁজা গ্রামের এক বাসিন্দা। ধৃত শাহারুল শেখের বয়ানে উঠে এসেছিল নাসিরের নাম। শাহরুলের দাবি, সইফুদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন এই নাসিরই। মঙ্গলবার পর্যন্ত নাসিরের সম্পর্কে বিশেষ তথ্য ছিল না পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশের সূত্রে বুধবার পাওয়া খবর অনুযায়ী, শাহরুল বয়ানে জানিয়েছেন, কলকাতায় পুরনো জিনিসপত্র কেনা-বেচার কাজ করতেন এই নাসির। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে নাসিরের পরিবার। তাঁর পরিবারের দাবি, নাসিরকে ইচ্ছা করে ফাঁসানোর জন্যই তাঁর নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সইফুদ্দিন খুনের পর থেকে নাসিরেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তার মধ্যেই সইফুদ্দিন খুনের অন্য ‘পাকা মাথা’র খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই ব্যক্তি আনিসুর।
সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন, সইফুদ্দিনকে খুনে এক লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল। সেই ভাড়াটে খুনিদের খোঁজ চলছে। এখনও পর্যন্ত তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত অনেকেরই হদিস পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে জয়নগর, বকুলতলা, কুলতলি, বারুইপুর থানার পিসি পার্টির ইনচার্জ এবং তাঁদের দলকে এই ঘটনার তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বারুইপুর জেলা পুলিশের মাথার উপরে রয়েছেন পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ এবং এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস।
বারুইপুর, জয়নগর, কুলতলি এলাকার পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবার, মন্দিরবাজার এবং কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy