অ-স্বাস্থ্য: সরকারি হাসপাতালের পাশেই চরছে শুয়োর। রবিবার, দেগঙ্গায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
সরকারি হাসপাতাল। পাশেই পরপর খামার। সেখানে চরে বেড়াচ্ছে দলে দলে শুয়োর। নোংরা জল থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। কাঁচা নর্দমায় উপচে পড়ছে পলিথিন আর প্লাস্টিকের চায়ের কাপ। সেই জলে জন্মাচ্ছে মশা। এমনই অবস্থা দেগঙ্গার মূল সরকারি হাসপাতাল বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
এমনিতেই জ্বর আর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেগঙ্গায়। ইতিমধ্যে মারাও গিয়েছেন কয়েক জন। চিকিৎসার ভরসা বলতে সবেধন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। আর সেখানেই ঢোকার মুখে দেখা যাবে এমন চিত্র। বিষয়টি নিয়ে বহু বার অভিযোগ জানিয়েছেন রোগীরা। কিন্তু অভিযোগ, এ ব্যাপারে একে অন্যের উপরে দায় চাপিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর, জেলা প্রশাসন ও পঞ্চায়েত। ফলত, সমস্যার সমাধান আজও হয়নি। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বরের চিকিৎসা করাতে আসা সহাইয়ের বাসিন্দা আজমিরা বিবির কথায়, ‘‘ডেঙ্গির মশা জন্মানোর সবচেয়ে উপযুক্ত পরিবেশ তো হাসপাতাল! ভয় লাগে, জ্বরের চিকিৎসা করাতে এসে না এখানকার মশার কামড়ে ডেঙ্গি হয়ে যায়।’’
অভিযোগের সুর খোদ দেগঙ্গার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজ সিংহেরও কথাতেও। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢোকার মুখেই যদি এমন পরিবেশ থাকে, তা হলে এলাকার অবস্থা কেমন, সহজেই অনুমেয়। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিডিওকে জানালেও বন্ধ করা যায়নি শুয়োরের খামার। ব্যবস্থা হয়নি আবর্জনা পরিষ্কার করার।’’
কী বলছে প্রশাসন?
দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আমাকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। আমি পঞ্চায়েত প্রধানকে বলেছি, অবিলম্বে শুয়োর চরানো বন্ধ করতে হবে। জমা জল পরিষ্কার করে মশা মারার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রধান তা কেন করতে পারেননি, দেখা হচ্ছে।’’
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নুরনগর পঞ্চায়েতের অধীনে। পঞ্চায়েত প্রধান উমা দাস বলেন, ‘‘আমি জমির মালিকের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি বলেন, ওই জলাজমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করবেন।’’ উমার অভিযোগ, ‘‘পুকুরের অস্তিত্ব নেই। তা সত্ত্বেও জমির মালিক কিছুতেই জমা জল বার করার ব্যপারে সহযোগিতা করছেন না। ফলে নোংরা জল পেয়ে ভিড় জমাচ্ছে শুয়োরেরা।’’
ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেল, কয়েক ঘর বাসিন্দার একমাত্র রোজগার বলতে শুয়োর প্রতিপালন। তাঁদের পাল্টা দাবি, বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করলে তাঁরা শুয়োর চরানো বন্ধ করে দেবেন। যদিও স্থানীয় মানুষ বলছেন, নিচু জায়গা হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে জল জমে যায়। জমি ভরাট করে দিলে আর শুয়োর চরতে পারবে না। ভিতরের দিকে শুয়োর চরানোর ফাঁকা জমি রয়েছে। তাঁদের দাবি, প্রশাসন শক্ত হাতে ব্যবস্থা না নিলে এই বর্ষায় মশার উপদ্রব আরও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy