ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে কাছে লেভেল ক্রসিং এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার।
শিয়ালদহ মেন লাইনে খড়দহ স্টেশনের গায়ে ৯ নম্বর রেলগেটটি বন্ধ হওয়ার সময় রেল ট্র্যাকে ঢুকে পড়েছিল দু’টি গাড়ি। ডাউন হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দু’টি গাড়ির ক্ষতি হলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন আরোহীরা। এই ঘটনা ফের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে জনবহুল এলাকায় রেলগেটগুলিতে বেনিয়মের বাড়াবাড়িকে।
রবিবার রাতে শিয়ালদহ-লক্ষ্মীকান্তপুর শাখায় সূর্যপুরে বন্ধ রেলগেট পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম রহিমা মণ্ডল (৭০)। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই এই সব রেলগেটের চিত্র যখন একই আছে, তখন অন্য রেলগেটগুলিতে সচেতনতার ছবি দেখা যাবে তা দুরাশা। তবুও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে যে রেলগেটগুলি একটি বা দু’টি ট্রেন পার হওয়ার জন্য বন্ধ হলেও ব্যাপক যানজট হয় সেগুলি ঘুরে দেখা গেল, সচেতনতার লেশমাত্র নেই। খড়দহের ৯ নম্বর রেলগেটেই এ দিন সকালে স্কুলের পড়ুয়াদের বন্ধ রেলগেট নির্দ্বিধায় পার হতে দেখে মোবাইলে ছবি তুলে রাখলেন রেল কর্মীরা। বাজারের থলে হাতে বৃদ্ধ নাতির হাত ধরে ঘাড় ঝুঁকিয়ে বন্ধ রেলগেট পার হলেন পিছন থেকে, ‘১ নম্বরে ট্রেন আছে, দাঁড়িয়ে যান’ সহনাগরিকের সাবধান বাণী শোনার পরেও।
শুধু খড়দহ কেন, উত্তর থেকে দক্ষিণ দুই ২৪ পরগনার অসংখ্য রেলগেটে একই চিত্র। ব্যারাকপুর ১৪ নম্বর রেলগেটও স্টেশন সংলগ্ন। গেটম্যানদের অভিযোগ, ‘‘ট্রেন ধরার তাড়ায় রেলগেটের তলা দিয়ে মাথাটুকু গলিয়ে দিলেই যেন হল। গা ঘেঁষে এক বা চার নম্বর ট্র্যাক দিয়ে কোনও দ্রুতগামী ট্রেন গেলে তো হাওয়ার তোড়েই পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটবে। কিন্তু সে কথা বললে শুনছে কে! উল্টে আমাদের চোটপাট করে সকলে, তাড়া থাকার দোহাই দিয়ে।’’ রেলগেটে আটকে পড়া যানবাহনের চালকদেরও অভিযোগ, ‘‘ব্যস্ত সময়ে ট্রেন যাবে বলে সড়ক পথে লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। অ্যাম্বুল্যান্সে সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকা রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হয় এই দেরির কারণে। কেন উড়ালপুল বা সাবওয়ে করা হয় না বার বার দুর্ঘটনার পরেও?’’ খড়দহের পুরপ্রধান নীলু সরকার বলেন, ‘‘আমরা রেলের কাছে আর্জি জানিয়েছি উড়ালপুলের।’’ যদিও রেলের আধিকারিকেরা জানান, এই এলাকায় উড়ালপুল করতে হলে প্রায় আড়াইশো দোকান সরাতে হবে ও বহু বাড়ি ভাঙা পড়বে।
লেভেল ক্রসিংয়ে গেট পড়া থাকলেও মানুষজন তার তোয়াক্কা না করে লাইন পার হচ্ছেন এমন দৃশ্য বনগাঁ এবং হাবড়া শহরে প্রায়ই দেখা যায়। বনগাঁ শহরে যশোর রোডে ১ নম্বর রেলগেটে দেখা গেল গেট পড়ার পরেও মানুষ ঝুঁকে গেটের তলা দিয়ে যাতায়াত করছেন। এমনকি সাইকেল নিয়েও মানুষজন ঝুঁকির পারাপার করছেন। দূর থেকে ট্রেনের হুইসেল কানে এলেও তোয়াক্কা না করে এক মহিলা গেটের তলা দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকজন চিৎকার করে থামান। মহিলার কথায়, ‘‘একটু ব্যস্তটা ছিল। তা ছাড়া ট্রেন তো দূরেই ছিল। চলে যেতে পারতাম।’’ রেল পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা হলেও অধিকাংশ মানুষ এ সবের ধার ধারেন না বলেই পুলিশের দাবি। একই ছবি হাবড়া শহরে ১ ও ২ নম্বর রেলগেটেও।
পূর্ব রেল এ দিনও জানিয়েছে, লেভেল ক্রসিং চত্বরে ট্রেনের সঙ্গে গাড়ি ও পথচারীদের সংঘাত এড়াতে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়। যাঁরা নিয়ম ভাঙছেন তাঁদের ছবিও তোলার ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রচারে সেই ছবি তুলে ধরে সচেতন করার কথা জানিয়েছে রেল পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy