Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পর্যটন কেন্দ্র চান বেড়ি পাঁচপোতার বাসিন্দারা

যে দিকে চোখ যায়, সবুজের সমারোহ। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা জানালেন, অতীতে অশ্বক্ষুরাকৃতি বাওরটি ইছামতীর অংশ ছিল। পরবর্তী সময়ে নদী বাঁক নেওয়ায় বাওরটি জেগে আছে।

গাইঘাটার ডুমার বাওর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

গাইঘাটার ডুমার বাওর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র 
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

সীমান্তে কাঁটাতার পেরিয়ে দূর আকাশে উড়ে যাচ্ছে পাখির দল। চারিদিকে বিস্তৃত জলরাশি। পড়ন্ত বিকেলের সূর্যের ছবি সেই জলে। পূর্ণিমায় বাওর ভেসে যায় চাঁদের প্রতিচ্ছবিতে। তার মাঝে আলপনা কেটে এগোয় ছোট্টো নৌকো। প্রকৃতি এখানে উজাড় করে দিয়েছে নিজের রূপ।

এলাকাটি গাইঘাটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত-লাগোয়া গাইঘাটার বেড়ি পাঁচপোতা। যে দিকে চোখ যায়, সবুজের সমারোহ। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা জানালেন, অতীতে অশ্বক্ষুরাকৃতি বাওরটি ইছামতীর অংশ ছিল। পরবর্তী সময়ে নদী বাঁক নেওয়ায় বাওরটি জেগে আছে।

এই এলাকা দেশের পর্যটন মানচিত্রে উঠে আসুক, এই দাবি এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের। মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রশাসনিক নানা মহলে তাঁরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেওয়া হয়েছে। জনশ্রুতি, বহু পূর্বে এলাকায় বন্দর ছিল। রাজা প্রতাপাদিত্য ইছামতী নদী ধরে এখানে এসেছিলেন।

তারই প্রেক্ষিতে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী সরেজমিনে ঘুরে দেখলেন বেড়ি পাঁচপোতা। শনিবার তিনি আসেন এলাকায়। পরে বলেন, ‘‘এই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা শুনেছিলাম। নিজের চোখে দেখে গেলাম।’’ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই এখনই কিছু জানাতে পারেননি তিনি। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ধ্যানেশনারায়ণ গুহ ছিলেন জেলাশাসকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই, এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠুক। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য কাছেপিঠে নেই। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে।’’

বেড়ি বাওর ছাড়াও সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ডুমোর বাওর, বলদেঘাটা বাওর, ঝাউডাঙা বাওর এবং অবশ্যই ইছামতী নদী। নদীর ও পারে বাংলাদেশ। এ পারে দাঁড়িয়ে দূর থেকে ও দেশের গাছগাছালি, বাড়ি-ঘর, খেত দেখা যায়। রয়েছে প্রাচীন কালীমন্দির। স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুল শিক্ষক জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা চাই বেড়ি পাঁচপোতা দেশের ভ্রমণ মানচিত্রে স্থান পাক। সল্টলেকের ইকো পার্কের ধাঁচে সাজিয়ে তোলা হোক পাঁচপোতার বেড়ির বাওরকে।’’ তাঁর প্রস্তাব, ‘‘আশপাশের তেঁতুলবেড়িয়া, গড়জেলা, কালাঞ্চি, বাউডাঙা, বলদেঘাটা এলাকা নিয়ে ইকো ট্যুরিজম গড়ে উঠুক।’’ সে ক্ষেত্রে আশপাশের এলাকার বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে।বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার গোবরডাঙা স্টেশনে নেমে মাত্র ১১ কিলোমিটার পথ বাস-অটো-ট্রেকার বা অন্য যানবাহনে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় পাঁচপোতা বাজারে। বনগাঁ শহর থেকে এলাকাটি কাছে। বছরভর, বিশেষ করে শীতের মরসুমে বেড়ি পাঁচপোতা বাওর ও ডুমোর বাওরের আকর্ষণে বহু মানুষ এখানে সময় কাটাতে আসেন। বাওরের পাড়ে বনভোজন হয়। নৌকো-বিহার করেন অনেকে। তবে এখানে আসতে হলে নিজের পরিচয়পত্র রাখা জরুরি। কারণ, সর্বদা বিএসএফ জওয়ানদের নজরদারি থাকে। জ্যোতিপ্রকাশ জানান, গত দু’বছর ধরে সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েক লক্ষ মানুষের কাছে বেড়ি পাঁচপোতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। সেই সূত্রে এখন অনেকে ঘুরতে আসেন এখানে। দেশের বাইরে থেকেও প্রচুর মানুষ আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে রাত্রিযাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা চান, দ্রুত কটেজ, হোম-স্টে গড়ে তুলুক রাজ্য সরকার।

অন্য বিষয়গুলি:

Panchpota Gaighata Tourism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy