Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Iririgation Minister at Nazat

সেচমন্ত্রীর কাছে কংক্রিটের বাঁধ তৈরির দাবি গ্রামবাসীদের

স্থানীয় মানুষ জানালেন, ৩ নম্বর কাছারিপাড়ায় সুভাষ মণ্ডলের বাড়ির কাছ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার নদীবাঁধের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল।

মন্ত্রীকে সমস্যার কথা জানাচ্ছে গ্রামের মানুষ।

মন্ত্রীকে সমস্যার কথা জানাচ্ছে গ্রামের মানুষ। নিজস্ব চিত্র।

নবেন্দু ঘোষ 
ন্যাজাট শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ০৮:৫৫
Share: Save:

মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে গ্রামের মানুষের একটাই দাবি, এ বছরের পর বছর এমন অনিশ্চিত জীবনে এ বার অন্তত একটু সুরাহা হোক। দুর্বল মাটির বাঁধের বদলে বাঁধ হোক কংক্রিটের।

সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট ১ পঞ্চায়েতের চারদিকে নদী-ঘেরা। মাঝখানে ছোট্ট একটি দ্বীপ নিয়ে পঞ্চায়েত এলাকা। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বসবাস। দ্বীপের চারদিকে প্রায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার নদীবাঁধ আছে। এর মধ্যে মাত্র ১ কিলোমিটার অংশ কংক্রিটের বলে পঞ্চায়েত সূত্রের খবর। রেমালে এই দ্বীপের প্রায় ২০-২৩ কিলোমিটার মাটির নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামের মানুষ বাড়ির পাশের নদীবাঁধ বুক দিয়ে রাত-দিন আগলে রেখে ভাঙতে দেয়নি। তবে বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ধসে গিয়ে সরু সুতোর মতো হয়ে গিয়েছে।

যেমন, বাউনিয়া গ্রাম থেকে চরপাড়ায় দুলাল দাসের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ নদীর ঢেউয়ের ধাক্কায় সরু সুতোর মতো হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘ঝড়ের দিন দুপুর থেকে পর দিন বিকেল পর্যন্ত আমরা বাঁধে ছিলাম। বাঁধ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে, বস্তায় করে মাটি দিয়ে কোনও রকমে বাঁধ বাঁচিয়েছি। তবে বাঁধ যেমন দুর্বল হয়ে গিয়েছে, তাতে খুব ভাল করে মেরামত করা দরকার। না হলে পরবর্তী দিনে ফের কোনও দুর্যোগ এলে আর রক্ষা করা যাবে না। সব ভেসে যাবে!’’

স্থানীয় মানুষ জানালেন, ৩ নম্বর কাছারিপাড়ায় সুভাষ মণ্ডলের বাড়ির কাছ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার নদীবাঁধের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। সেই সঙ্গে এই এলাকায় গাজিপাড়া থেকে বাউনিয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার নদীবাঁধের অবস্থা খুব খারাপ। ৮ নম্বর বাঁশবেড়িয়া এলাকা থেকে জাকির মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত নদীবাঁধের বিভিন্ন অংশ ধসে গিয়েছে। এ ছাড়া, ৪ নম্বর গোলদার পাড়া এলাকাতেও নদীবাঁধ প্রায় ১ কিলোমিটার অংশ জুড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে। জলস্তর বাড়লেই জল গ্রামে ঢুকে পড়বে বলে আশঙ্কায় আছেন মানুষ। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান নারায়ণ পাত্র বলেন, ‘‘চরপাড়ায় যে এক কিলোমিটার বাঁধ কংক্রিটের হয়েছে, সেই অংশে ভাল আছে বাঁধ। এমন করে যদি গোটা পঞ্চায়েত এলাকার নদীবাঁধ কংক্রিটের করা যায়, তবে এই দ্বীপ এলাকার মানুষ রক্ষা পাবেন। না হলে যে কোনও একটা জায়গা দিয়ে যদি গ্রামে জল ঢোকে, তবে গোটা পঞ্চায়েত এলাকা ভেসে যেতে পারে।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, আয়লা-আমপানে এই পঞ্চায়েত এলাকা সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে গিয়েছিল। নদীবাঁধ বহু জায়গায় ভেঙে যায়। এই দ্বীপ থেকে মানুষকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্যোগ এলেই এই দ্বীপের মানুষ বাঁধ ভাঙার ভয়ে থাকেন। তাই বাসিন্দারা চান, এই পঞ্চায়েত এলাকা জুড়ে কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরি হোক।

রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এ দিন এই পঞ্চায়েতের বাউনিয়া এলাকার বাঁধ পরিদর্শনে আসেন। সঙ্গে ছিলেন সেচ দফতরের অধিকারিক ও সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো।

সেচমন্ত্রী পরিদর্শন করেন বাউনিয়া সিংহপাড়া এলাকার নদীবাঁধ। স্থানীয় বাসিন্দারা মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাঁকে ঘিরে দাবি জানান, কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করতে হবে। যাতে বার বার নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলেই ঘর ছাড়তে না হয়।

মন্ত্রী প্রায় আধ ঘণ্টা ছিলেন। এরপরে সন্দেশখালি পঞ্চায়েত এলাকায় একটি নির্বাচনী সভা করেন। পার্থ বলেন, ‘‘এই পঞ্চায়েত এলাকায় যাতে নদীবাঁধ কংক্রিটের করা যায়, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Bhowmik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy