Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Dengue

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে রোজই ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গি রোগী

এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি গাইঘাটা ব্লকে। এখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৫ জন। বনগাঁ ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৯ জন। বাগদা ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ জন।

পদক্ষেপ: জমা জল ফেলে দিচ্ছেন এক পুরকর্মী। বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র

পদক্ষেপ: জমা জল ফেলে দিচ্ছেন এক পুরকর্মী। বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০৬
Share: Save:

ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ ঊর্ধমুখী বনগাঁ মহকুমা জুড়ে। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত ৩৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। রোজই নতুন করে ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত মহকুমায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৫৩। গত বছর এই সময় পর্যন্ত মহকুমায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ২৩ জন।

এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি গাইঘাটা ব্লকে। এখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৫ জন। বনগাঁ ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৯ জন। বাগদা ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ জন। বনগাঁ পুরসভা এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৭ অক্টোবরের আগের ৭ দিনে মহকুমায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮০ জন। তারও আগের ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৫ জন।

এরপরও অবশ্য মহকুমার একাংশের মানুষের মধ্যে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার বালাই নেই। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ির মধ্যে যত্রতত্র জমা জল থাকছে। টব, নারকেলের খোলা, মিষ্টির হাঁড়ি, প্লাস্টিকের ব্যাগ পড়ে থাকছে যত্রতত্র। অনেকেই বাড়িতে মশারি না টাঙিয়ে ঘুমোচ্ছেন।

অন্যদিকে এলাকার মানুষের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে মশা মারার কাজে গতি আসেনি। নিকাশি নালায় আবর্জনা জমে থাকছে। মশার উপদ্রব বেড়েছে। সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে বসা যাচ্ছে না। ইছামতী নদী কচুরিপানা ও কচুবনে আবদ্ধ। নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানালেন, নদী বদ্ধ হয়ে পড়ায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। ডেঙ্গির মশা বংশবিস্তার করছে। পরিবারের সদস্যদের জ্বর হচ্ছে। দ্রুত নদী সংস্কারের দাবি তুলেছেন তাঁরা।

বনগাঁ ব্লকের বিএমওএইচ তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের জেলা ডেঙ্গি পর্যবেক্ষক মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘বনগাঁয় যাঁরা ডেঙ্গি আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বেশিরভাগই কলকাতা বা সংলগ্ন এলাকায় কর্মসূত্রে যান। সেখান থেকেই বেশিরভাগ মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কোনও এলাকায় কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে সেই বাড়ির ৫০ মিটার এলাকার সমস্ত বাড়িতে সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে আর কোনও ডেঙ্গি রোগী আছেন কি না। এলাকার কোথাও ডেঙ্গি মশার লার্ভা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। থাকছে লার্ভা নষ্ট করার ব্যবস্থা।

মৃগাঙ্ক বলেন, ‘‘ প্রতি ৮ দিন অন্তর স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। ডিম থেকে মশায় পরিণত হতে ৮ দিন সময় লাগে। কোনও বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে।’’

গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করছেন। আশাকর্মীরা বাড়ি গিয়ে দেখছেন কারও জ্বর আছে কি না। জ্বর থাকলে তাঁকে রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। মশারি টাঙিয়ে ঘুমনো এবং ফুলহাতা জামা পরতে বলা হচ্ছে সকলকে। মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।’’ বাগদার বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক বলেন, ‘‘এলাকার মানুষকে সচেতন করতে পঞ্চায়েতের তরফে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। মশার লার্ভা নষ্ট করা হচ্ছে।’’

বনগাঁ পুরসভার তরফে ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার প্রচার চলছে। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতেও অভিনেতা অভিনেত্রীদের এনে সচেতনতার প্রচার চালানো হয়েছে। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। গোপাল বলেন, ‘‘বনগাঁ পুরসভা এলাকা থেকে কারও ডেঙ্গি হয়নি। এলাকার রোগীরা কাজের সূত্রে বাইরে গিয়ে সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy