পার্থ ভৌমিক। —ফাইল চিত্র।
সিএএ কার্যকর হওয়ায় মতুয়াদের একাংশ খুশি। অনেকেই মনে করছেন, এ বার বনগাঁ লোকসভা আসনে তৃণমূলের লড়াই সহজ হবে না। তা ছাড়াও, সন্দেশখালি কাণ্ড-সহ নানা কারণে জেলা তৃণমূল কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ও পুরভোটের জয়ের ব্যবধান যাতে না-কমে তা নিয়ে দলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির আহ্বায়ক পার্থ ভৌমিক।
সোমবার বনগাঁ শহরে নির্বাচনী কর্মিসভায় এসে পার্থের হুঁশিয়ারি, ‘‘পঞ্চায়েত বা পুর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা নিজেদের এলাকায় যে ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে সেই সব এলাকায় জয়ের ব্যবধান কমে গেলে দল তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।’’
কেই এই হুঁশিয়ারি?
উত্তরও পার্থ দিয়েছেন। সভায় তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভোট কমলে ধরে নিতে হবে নিজের ভোটের সময় আপনি যে পরিশ্রম করেছিলেন, লোকসভা ভোটে তা করেননি। দল তখন নিশ্চিত ভাবেই আপনাদের বুঝে নেবে এবং কড়া পদক্ষেপও করবে।’’
বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা এলাকার ১৯২৭টি বুথের দলীয় প্রতিনিধিরা ওই কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও ছিলেন বনগাঁ লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস, জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী, বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ- সহ দলীয় পদাধিকারী ও জনপ্রতিনিধিরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বনগাঁ লোকসভা আসনে ২০১৯ সাল থেকেই বিজেপি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সে বার বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর প্রায় ১ লক্ষ ৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। এই লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র স্বরূপনগর ছাড়া বাকিগুলিতে বিজেপি প্রার্থী এগিয়ে ছিলেন।
২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও একই ফল হয়। স্বরূপনগর ছাড়া বাকি ৬টি কেন্দ্রে (বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, গাইঘাটা, হরিণঘাটা এবং কল্যাণী) বিজেপি জেতে। তারপরে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা তৃণমূলের পক্ষে স্বস্তিদায়ক হয়নি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, এ বারের লড়াই যথেষ্ট কঠিন। তাই পার্থের ওই বার্তা।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত ১৯২৭টি বুথে শীঘ্রই বুথভিত্তিক নির্বাচনী কমিটি তৈরি করা হবে। প্রার্থী বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজেদের এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে একাধিকবার করে যেতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি, কেন্দ্রের বঞ্চনার কথাও তুলে ধরতে হবে।’’
তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের অধিকাংশেরই দাবি, সেচমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সঠিক। বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকায় একাধিক উন্নয়ন হয়েছে। তাই দল আশা করতেই পারে জনপ্রতিনিধিদের নিজেদের এলাকায় জয়ের ব্যবধান বাড়বে। আমিও চেষ্টা করব আমার এলাকায় আমার জয়ের থেকে ব্যবধান বাড়াতে।’’
তবে, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের দাবি, ‘‘বনগাঁ লোকসভা আসনে তৃণমূল গো-হারা হারবে। তখন কে কার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে? সিএএ নিয়ে তৃণমূল মানুষকে ক্রমাগত ভুল বোঝাচ্ছে। মতুয়ারা এই অপপ্রচারের জবাব দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy