বিতর্ক: বক্তৃতা করছেন মোদাচ্ছের, পাশে আরাবুল। নিজস্ব চিত্র
শাসকদলে নাম না লেখালে মিলবে না সরকারি প্রকল্পে ঘরের টাকা, নাম কাটা যাবে স্বাস্থ্যসাথী থেকে, বাদ পড়তে হবে অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকেও— দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে দলের এক কর্মিসভায় এই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান।
ভাঙড় ২ ব্লকের ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাচ্ছের হোসেন এর আগেও নানা সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। শনিবার কাঁঠালিয়ায় এক ঘরোয়া কর্মিসভায় মোদাচ্ছের বলেন, ‘‘সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে টাকা পাবেন তৃণমূল কর্মীরা।’’ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, ‘‘
‘‘আইএসএফ করবে আর ঘরের টাকা নেবে, সেই দিন আর নেই। যারা তৃণমূলের সঙ্গে থাকবে কেবল তারাই ওই টাকা পাবে। আমাদের আধার লিঙ্কের কাজ হয়ে গিয়েছে। ১ লক্ষ ৯৫ হাজার করে টাকা আ্যাকাউন্টে ঢুকবে। যারা আমাদের সঙ্গে দল করবে, তাদের আগে টাকা আগে না দিয়ে, যারা খাম চিহ্ন (আইএসএফের প্রতীক) নিয়ে ঘুরে বেড়াবে, তাদের টাকা আগে দেব? সে দিন আর নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি আমরা ঘরের টাকা দেব কেবলমাত্র যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে, তাদেরই। যারা ভাবছে আইএসএফের হাতকে শক্ত করবে, তাদের ২ টাকার কেজি দরের চাল বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টাকাও। সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।’’ আইএসএফকে ভোট দিয়েও যাঁরা সরকারি দু’টাকা কেজি দরের চাল নিচ্ছেন, সরকারি ঘরের টাকা পেয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান মোদাচ্ছের।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ইসলাম, কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল ওদুত মোল্লা-সহ অনেকে। তাঁদের সামনেই নওশাদের সমালোচনা করে মোদাচ্ছের বেশ কিছু অপশব্দ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।
মোদাচ্ছেরের মন্তব্য ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ২০১৯ লোকসভা ভোটে সময়ে কৃষক বন্ধু চেক বিলি করতে গিয়ে মোদাচ্ছের বলেছিলেন, ‘‘এক হাতে চেক নাও, অন্য হাতে মিমি চক্রবর্তীকে ভোট দাও।’’ সেই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক কম হয়নি। ২০২২ বিধানসভা ভোটের সময়ে বিরোধীদের তিনি নিদান দেন, পঞ্চায়েতের তৈরি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যাবে না। প্রয়োজনে রাস্তা কেটে দেওয়ার হুমকি দেন। এ ছাড়াও, অতীতে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছিলেন প্রধান। দলকে এ সব নিয়ে নানা সময়ে অস্বস্তিতে পড়তে হলেও মোদাচ্ছেরের বিরুদ্ধে কখনওই কড়া পদক্ষেপ করেননি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
নওশাদ পরে বলেন, ‘‘মোদাচ্ছের ভুলে গিয়েছেন, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। একজন জনপ্রতিনিধি এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। কারণ, এটা সংবিধানবিরুদ্ধ। আসলে তৃণমূল নেতাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপোষণের জন্য মানুষ তাঁদের প্রত্যাখ্যান করছেন। সে কারণে আইএসএফ কর্মীদের ভয় দেখাতে এ ধরনের কথা বলছেন। পঞ্চায়েত ভোটে ভাঙড়ের মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবেন।’’
মঞ্চে প্রতিবাদ না করলেও আরাবুল পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মঞ্চে থাকাকালীন আমাদের সামনে আলটপকা মন্তব্য করে ফেলেছেন উনি। দল কোনও ভাবেই এ ধরনের মন্তব্য সমর্থন করে না। যিনি এ ধরনের মন্তব্য করেছেন, এটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। আমরা জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের জন্য এবং এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করি। এখানে কোনও রাজনৈতিক রং, জাতি, ধর্ম, বর্ণ দেখা হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy