ফাইল চিত্র।
জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার প্রশাসক সুজিত সরখেলকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। এই পুরসভার কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে পুরপ্রধান সুজিতই প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধানের পদ সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁকে সরিয়ে তৃণমূল নেতা সুকুমার হালদারকে পুরপ্রশাসক করা হয়েছে। এই ঘটনায় সরকারের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
২০২০ সালে এই পুরসভার কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। রাজ্যের অধিকাংশ পুরবোর্ডেরই মেয়াদ শেষ হয় এই সময়ে। বিদায়ী পুরপ্রধানদের প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান করে কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। জয়নগরেও বিদায়ী পুরপ্রধান সুজিত সরখেলকে প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান করা হয়। সুজিত ছাড়াও বিদায়ী উপপ্রধান কংগ্রেসের তুষারকান্তি রায়কে রাখা হয় প্রশাসকমণ্ডলীতে। এ ছাড়াও দুই তৃণমূল কাউন্সিলরকে প্রশাসকমণ্ডলীতে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূল পরিচালিত অন্য অধিকাংশ পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীতে অবশ্য বিরোধী কাউন্সিলরেরা জায়গা পাননি। সেখানে জয়নগরে দুই তৃণমূল কাউন্সিলরের জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান সেই সময়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে দুই বিরোধী কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে চলারই বার্তা দিয়েছিলেন।
সোমবার রাতে সরকারের তরফে নতুন প্রশাসকমণ্ডলী ঘোষণা করা হয়। সেখানে তুষারকান্তিকে রাখা হলেও পুরপ্রশাসকের পদ থেকে সুজিতকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বদলে প্রধান করা হয়েছে সুকুমারকে। সুকুমার তৃণমূলের টিকিটে আগে জিতলেও, গত পুরভোটে দাঁড়াননি। ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাঁর স্ত্রী। আগে ঘোষিত প্রশাসকমণ্ডলীতেও ছিলেন না সুকুমার।
রাজ্যের অন্য অনেক পুরসভাতেই প্রশাসকমণ্ডলীতে পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে সেখানে তৃণমূল নেতার বদলে অন্য তৃণমূল নেতাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম জয়নগরই। সেখানে বিরোধী দলের নেতাকে সরিয়ে তৃণমূল নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, “এই সরকারের নৈতিকতা বলে কিছু নেই। সম্পূর্ণ স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে সরকার চলছে। এই ঘটনায় তা আরও একবার প্রমাণ হল।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সারা রাজ্যেই তৃণমূলের মনোনীত বাহিনী দিয়ে পুরসভাগুলিতে লুট চালানো হচ্ছে। জয়নগরে এত দিন সেটা সম্ভব হচ্ছিল না। এ বার সেটারও ব্যবস্থা করে ফেলল এরা। এই সরকারের নৈতিকতা বলে কিছুই নেই।” জয়নগরের প্রাক্তন বিধায়ক এসইউসির তরুণকান্তি নস্কর বলেন, “এই ঘটনায় তৃণমূল সরকারের গণতান্ত্রিক মুখোশটা খুলে পড়ল। একদিকে তারা কেন্দ্র সরকারের অগণতান্ত্রিক কাজের প্রতিবাদ করছে, আবার এখানে নিজেরাই অগণতান্ত্রিক কাজ করছে।”
সুজিতের কথায়, “যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিই নন। পুরসভায় লুটপাট চালাতেই অগণতান্ত্রিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসক বদল নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy