বন্ধ লালারস সংগ্রহ। ফাঁকা পড়ে রয়েেছ কিয়স্ক। বাসন্তী গ্রামীণ হাসপাতালে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
কয়েক দিন ঘুরেও সরকারি হাসপাতালে লালারস পরীক্ষা করাতে পারলেন না এক পুলিশ অফিসার। তারই থানার কয়েকজন পুলিশ অফিসার করোনায় আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন ওই পুলিশ অফিসারও। চিকিৎসক তাঁকে লালারস পরীক্ষার পরামর্শ দেন।
ওই পুলিশ অফিসারের অভিযোগ, বেশ কয়েকদিন ধরে ঘুরেও ভাঙড়ের একটি ব্লক হাসপাতাল তাঁর লালারস সংগ্রহ করেনি। শুধু ওই পুলিশ অফিসারই নন, বহু সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে গিয়ে লালারসের পরীক্ষা করাতে পারছেন না বলে অভিযোগ। এ দিকে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধিকাংশ ব্লক হাসপাতালগুলিতে এবং সরকারি হাসপাতালে লালারসের পরীক্ষা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ২৯টি ব্লক হাসপাতালে প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল লালারসের নমুনা সংগ্রহ। এ জন্য ব্লক হাসপাতালগুলিতে তৈরি করা হয়েছিল কিয়স্ক। পাশাপাশি পাঁচটি মোবাইল ভ্যানও প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে সন্দেহজনকদের লালারস সংগ্রহ করছিল। জেলায় দৈনিক এক হাজার রোগীর লালারসের নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে তার অর্ধেক সংখ্যকও নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলাতেও একই অভিযোগ রয়েছে।
ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি গ্রামের এক বাসিন্দার প্রতিবেশী দিন কয়েক আগে করোনায় আক্রান্ত হন। তিনি সরাসরি আক্রান্তের সংস্পর্শে এসছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে ভাঙড়ের জিরানগাছা ব্লক হাসপাতালে লালারসের নমুনা দিতে যান। ওই ব্যক্তি জানান, কয়েক দিন গেলেও ওই হাসপাতাল লালারসের নমুনা নেয়নি। এক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘কেবলমাত্র যাঁদের উপসর্গ রয়েছে, তাঁদেরই লালারসের নমুনা নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও লালারস নেওয়া হচ্ছে। তবে, তার জন্য আলাদা অনুমতি নিতে হচ্ছে।’’
ক্যানিং মহকুমাতেও করোনা-পরীক্ষা যথেষ্ট কম হচ্ছে বলে অভিযোগ। আগে যেখানে সপ্তাহে তিন দিন মহকুমার সমস্ত ব্লক হাসপাতাল থেকে অন্তত তিনশো নমুনা সংগ্রহ করা হত, বর্তমানে সেখানে মহকুমা থেকে সপ্তাহে মাত্র ৫০টি নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে কারও লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানোর দরকার হলে তা করা যাবে বলে নির্দেশ এসেছে।
চিকিৎসকদের মতে, যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলিতে এবং বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তির জায়গা মিলছে না। তাই সন্দেহজনক কোভিড রোগীদের বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকার কথা বলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে যাদবপুরের বিধায়ক তথা বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সরকার প্রথম থেকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধামাচাপা দিচ্ছে। সঠিক পরিসংখ্যান তারা দিচ্ছে না। সাধারণ মানুষ যাঁরা করোনা টেস্ট করাবেন, তাঁদের জন্য সরকারি কোনও ব্যবস্থা নেই। কোথায় তারা টেস্ট করাবেন, তা তারা জানেন না। তাঁরা ঘুরে ঘুরে হয়রান হলেও সরকারের কোনও দায়বদ্ধতা নেই।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের সর্দার বলেন, “বিরোধীরা আমাদের বদনাম করতে এ সব কথা বলছে। টেস্টের সংখ্যা যদি কমই হবে, তা হলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কী ভাবে?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy