ভাঙাচোরা: এই দশা হয়েছে ভবনের। নিজস্ব চিত্র
কয়েক মাস আগে ঘুমের মধ্যে সাপে কামড়েছিল গোবরডাঙা পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকার এক কিশোরীকে। প্রায় চোদ্দো কিলোমিটার দূরে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই মারা যায় নবম শ্রেণির পড়ুয়া জয়ন্তী দেব। প্রীতিলতা গার্লস স্কুলে পড়ত সে। তার মৃত্যুতে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-পড়শিরা ক্ষোভ উগরে দেন। সকলেরই বক্তব্য, বাড়ির কাছের গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল রাতে খোলা থাকে জয়ন্তীকে অকালে মরতে হত না।
গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদের দাবি, হাসপাতাল বন্ধ থাকার কারণে গত কয়েক বছরে সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে শ’খানেক মানুষ মারা গিয়েছেন। এই পরিসংখ্যান স্বাস্থ্য দফতর না মানলেও স্থানীয় বাসিন্দারা পরিষদের তথ্যকে বিশ্বাসযোগ্য বলেই মনে করেন।
গোবরডাঙা পুর এলাকার মানুষ ছাড়াও সংলগ্ন ইছাপুর ১, বেড়গুম ১, সুটিয়া, মছলন্দপুর, তেপুল মির্জাপুর-সহ কয়েকটি পঞ্চায়েতের পাঁচ লক্ষ মানুষ গোবরডাঙার হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। বাসিন্দারা জানালেন, দিনের বেলা যেমন তেমন ভাবে তবু কেটে যায়। রাতে চিকিৎসা পরিষেবা বলতে কিছুই থাকে না।
প্রায় পনেরো বিঘে জমির উপরে আস্ত হাসপাতালটি দ্বিতল ভবনের। অপারেশন থিয়েটার, রোগী ভর্তির শয্যা, এক্স রে মেশিন, প্রসবের ঘর, ডায়েরিয়া ওয়ার্ড, হৃদরোগ চিকিৎসার যন্ত্রপাতি-সহ বহু ব্যবস্থা ছিল কয়েক বছর আগেও। সে সব এখন নষ্ট হতে বসেছে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের থাকার জন্য বেশ কিছু কোয়ার্টারও আছে। সে সবও নষ্ট হওয়ার মুখে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে দেওয়ালে শ্যাওলা জমে গিয়েছে। হাসপাতাল চত্বর বন-জঙ্গলে ভরা। যন্ত্রপাতি সব ঘরবন্দি হয়ে পড়ে আছে। পানীয় জলের প্রকল্পটিও অকেজো। বাসিন্দারা জানালেন, একটু ঘসা মাজা করে নিলেই হাসপাতালের ভবনগুলি ঝাঁ চকচকে হয়ে উঠবে।
হাসপাতালের বর্তমান কর্মীরা জেলা পরিষদ থেকে নিযুক্ত হলেও তাঁদের বেতন দেয় রাজ্য। বহির্বিভাগে এখনও রোগী দেখেন একমাত্র চিকিৎসক। রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। সেই ওষুধ ও সরবরাহ করে স্বাস্থ্য দফতর। তা হলে জেলা পরিষদের হাত থেকে স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালটি নিচ্ছে না কেন, এই প্রশ্ন নানা মহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy