বারাসতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি সেরে বেরিয়ে আসছেন এনআইএ আধিকারিকরা। — নিজস্ব চিত্র।
বারাসতে এনআইএ অভিযান। মঙ্গলবার গভীর রাতে এনআইএ-র প্রতিনিধিরা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের রমেশপল্লি এলাকার একটি আবাসনে আসেন। রাতভর একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চলে। সেই ফ্ল্যাটটি এক ব্যবসায়ীর বলে জানা গিয়েছে। যদিও কেন অভিযান তা নিয়ে মুখ খোলেননি এনআইএ আধিকারিকেরা। তবে সূত্রের খবর, মানব পাচার মামলায় তদন্ত করতেই অভিযানে নেমেছে এনআইএ। শুধু বারাসতই নয়, দেশের একাধিক জায়গায় এই মামলায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে এনআইএ।
জানা গিয়েছে, বারাসাত নবপল্লির ১১ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন রমেশপল্লির ছায়ানট অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী সঞ্জীব দেবের বাড়িতে মঙ্গলবার গভীর রাতে হানা দেয় এনআইএ। দু’টি গাড়িতে করে এনআইএ আধিকারিকেরা এসেছিলেন। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাহিনী ফ্ল্যাট ঘিরে ফেলে। তার পর এনআইএ সঞ্জীবের ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে। বেশ কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চলার পর সঞ্জীবকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান এনআইএ-র তদন্তকারীরা। এনআইএ-র প্রতিনিধিরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। স্বভাবতই, কী উদ্দেশ্যে অভিযান তা জানা যায়নি। সঞ্জীবের স্ত্রী জানিয়েছেন, বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করে এনআইএ বেশ কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। যা তদন্তের স্বার্থে তারা সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছে। বারাসতের চাঁপাডালি এলাকায় সঞ্জীবের একটি ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের অফিস রয়েছে। সঞ্জীবকে সঙ্গে নিয়েই এনআইএ সেই অফিসে তল্লাশি চালাচ্ছে।
সঞ্জীবের স্ত্রী বলেন, ‘‘আমি কিছুই জানি না। রাতে এনআইএ এসেছিল, তল্লাশি করল আমাদের ঘর। আমার স্বামীকে কী ভাবে ফাঁসাল আমি বুঝতেই পারছি না। ব্যবসার কাজের কিছু টাকাপয়সা বাড়িতে ছিল। কত টাকা আমি ঠিক জানি না। মনে হয়, ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছে। ঘরে তল্লাশির পর স্বামীকে নিয়ে ওঁর দোকানে গেল। স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না আমাকে কিছুই জানায়নি।’’
শুধু বারাসতই নয়, একই জেলার গাইঘাটার হাজরাতলাতেও এক ব্যক্তির বাড়িতে যান এনআইএ আধিকারিকরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার কাকভোরে জনৈক বিকাশ সরকারের ভাড়াবাড়িতে হানা দেয় এনআইএ। বেশ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকাশকে আটক করে নিয়ে যায় এনআইএ। বিকাশের স্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা মূলত বাংলাদেশের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী বেশ কয়েক বছর আগে এখানে এসেছেন। তিনি চার মাস আগে পাসপোর্ট দেখিয়ে চিকিৎসার জন্য এ দেশে এসেছেন। কিন্তু তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আর ফিরতে পারেননি।
হাবরা থানার বানিপুর হিরাপোল এলাকায় জনৈক শঙ্কর দাসের খোঁজ করতেও এসেছিলেন এনআইএ আধিকারিকরা। কিন্তু তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাই তাঁর মামার সঙ্গে কথা বলে ফিরে যান এনআইএ আধিকারিকরা।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শঙ্কর বেশ কয়েক বছর আগে এ দেশে এসেছেন। তিনি প্রথমে জলের ব্যবসা এবং পরে একটি গেঞ্জির কারখানায় কাজ করতেন। পুজোর আগে তিনি বৃন্দাবন ঘুরতে গিয়েছেন। কিন্তু শঙ্করের বাবা, মা বছর পাঁচেক আগে এ দেশে আসেন। তাঁরাও বর্তমানে বাড়িতে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy