কিছু দূরের ময়না হাটে অবশ্য দেখা গেল উল্টো চিত্রটাই। দূরত্ব-বিধি ভেঙে, মাস্ক না পরে ভিড় জমালেন মানুষ। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটারও হবে না। কিন্তু এই সামান্য ব্যবধানে দৃশ্যের এমন বদল, তা-ও আবার এমন সময়ে— সত্যিই অবিশ্বাস্য। বারাসতের হেলা বটতলা আর ময়না হাটের সোমবারের সেই ছবি আশার সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কার মুহূর্তও তৈরি করেছে।
দিনের ব্যস্ত সময়ে শুনশান হেলা বটতলা। হাজারো সতর্কতায় কাজ না-হওয়ায়, তুমুল বিতর্কের পরে শেষ পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বারাসত পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এক কিলোমিটার দূরে ময়না হাটে ভিড়ের ছবিতে কোনও বদল নেই। যেটুকু বদল, তা শুধু মাস্কের ব্যবহারে। হাটের খদ্দের-বিক্রেতারা কেউ কেউ মাস্ক ব্যবহার করলেও তা কারও নাকের নীচে, কারও বা থুতনির তলায়। ভিড় দেখে কে বলবে, দূরত্ব-বিধি আর মাস্ক নিয়ে সরকারি বিধিনিষেধ রয়েছে!
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে হেলা বটতলা থেকে কিছুটা গেলেই ময়না। এখানে বারাসত পুলিশ জেলার সদর দফতর। বারাসত পুরসভার সীমা এই পর্যন্তই। এখানেই শেষ বারাসত থানার সীমানাও। এর পরে শুরু হচ্ছে দত্তপুকুর থানা। এলাকাটি পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েতের অধীনে। জাতীয় সড়কের ধারে সোম এবং শুক্রবার সকালে বসে হাট। দূরদূরান্ত থেকে আসেন পাইকারি আনাজের ক্রেতা-বিক্রেতারা।
বারাসত এবং সংলগ্ন এলাকায় করোনা-সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়লেও হাটের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এ দিনও দেখা গেল, এক জন কার্যত আর এক জনের ঘাড়ের উপরে এসে পড়ছেন। মাস্ক যাঁরা ব্যবহার করছেন, তাতে অধিকাংশেরই নাক ঢাকা নেই। কেউ কেউ এক কানে ঝুলিয়ে রেখেছেন মাস্ক। পান খাচ্ছেন বলে কেউ কেউ আবার স্থায়ী ভাবে মাস্ক থুতনির নীচে নামিয়ে রেখেছেন। ফলে প্রশ্ন উঠছে, নাকের ডগায় এমন ভিড় হলে বারাসতে পূর্ণ লকডাউন করে বিশেষ লাভ হবে কি? পুলিশ অবশ্য বলছে, হাট বন্ধের কোনও নির্দেশিকা নেই। তবে ভিড় এবং মাস্কের ব্যবহার নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।
লকডাউন হওয়ার পর থেকেই নিয়ম ভাঙার খেলায় অন্য অনেক শহরের থেকে এগিয়ে ছিল বারাসত। কখনও পুলিশ, কখনও পুরসভা সতর্কতা জারি করেছে। বেলাগাম ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। পুলিশকর্তা থেকে জনপ্রতিনিধি, ভিড় নিয়ন্ত্রণে পথে নেমেছিলেন সকলেই। তাতেও লাভ হয়নি। দিন কয়েক আগে করোনা-আক্রান্ত হন খোদ পুর প্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায়।
গত সপ্তাহে সর্বদল বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে শনিবার থেকে পূর্ণ লকডাউন শুরু করেছে বারাসত পুরসভা। পূর্ণ লকডাউন ঘোষণার পরে কাজ যে হয়েছে, তা খোলা চোখে দেখা যাচ্ছে। সকাল থেকে রাস্তাঘাট ফাঁকা। দোকান-বাজার বন্ধ। বড় বাজার, হাটখোলা বাজার, কাছারি ময়দান, হেলা বটতলা বাজার— সর্বত্র বন্ধ দোকানপাট। এমনকি, তার জন্য পুলিশকেও বিশেষ দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে না। তা হলে পূর্ণ লকডাউনই কি সমাধান, ঘুরেফিরে আসছে সেই প্রশ্নটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy