লন্ডভন্ড: সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প রিসর্ট। নিজস্ব চিত্র
রিসর্ট এখন পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
গাছ ভেঙে পড়েছে কটেজের উপর। নষ্ট হয়ে গিয়েছে জরুরি নথিপত্র। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কম্পিউটার, শীততাপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রও। শনিবার রাতে বুলবুলের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের দয়াপুরের সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প রিসর্ট।
ভরা পর্যটন মরসুম। এই সময় সুন্দরবনে ভিড় জমান বহু দেশি-বিদেশি পর্যটক। বুলবুলের আগাম সতর্কবার্তায় রিসর্ট বুকিং বাতিল করে ফিরে যান দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। যার কারণে বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন পর্যটকরা। রিসর্টের কর্মচারীরা প্রাণ বাঁচাতে ফাঁকা জায়গায় চলে এসেছিলেন।
ওই রিসর্টে ৮-১০ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৯ জন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য বুকিং ছিল। এর মধ্যে ৫ জন ছিলেন বিদেশি পর্যটক। বুলবুলের আগাম সতর্কবার্তা হিসেবে বন দফতর রিসর্টগুলিকে বুকিং বাতিল করার নির্দেশ দেয়। সেই মতো দয়াপুরের ওই রিসর্টটি সমস্ত বুকিং বাতিল করে পর্যটকদের ফিরিয়ে দেয়।
গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘ব্লক এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় ১২ হাজার বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। প্রচুর গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। ওই রিসর্টটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। পুরো পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রাখছি। দুর্গত মানুষদের জন্য আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করেছি।’’
সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প রিসর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, রিসর্টটি ১৯টি কটেজে ভাগ করা আছে। তার মধ্যে ডাইনিং হল, কনফারেন্স রুম রয়েছে। শনিবার রাতে বুলবুল আছড়ে পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রিসর্টও। অধিকাংশ কটেজের উপর গাছ ভেঙে পড়ে। অধিকাংশ কটেজ ভেঙে পড়ে।
ওই রিসোর্ট সূত্রে জানানো হয়েছে, বুলবুলের তাণ্ডবে রিসর্টটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে রিসর্টে মজুত করে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ধরনের ফাইল, জরুরি, কাগজপত্র, কম্পিউটার, শীততাপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র থেকে শুরু করে সব কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোসাবার দয়াপুরের ওই রিসোর্ট শুধু নয় বুলবুলের তাণ্ডবে গোসাবা ব্লকের সাতজেলিয়া, কুমিরমারি, ছোট মোল্লাখালি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও মাটির বাড়ির চাল উড়ে গিয়ে দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। কোথাও বাড়ির চালে গাছ পড়ে বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। বহু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। সোমবারও ব্লক এলাকার অধিকাংশ জায়গা বিদ্যুৎহীন। নেই ইন্টারনেট সংযোগ।
সজনেখালি রেঞ্জ অফিসের অপর পারে দয়াপুরে তৈরি হয় ওই রিসর্টটি। গাছপালায় সুসজ্জিত মনোরম পরিবেশে তৈরি বহু পুরনো রিসর্টটি পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।
সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প রিসর্টের জেনারেল ম্যানেজার উদয়শঙ্কর রায় বলেন, ‘‘বুলবুলের তাণ্ডবে আমাদের পুরো রিসোর্টটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যা পরিস্থিতি তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতি সহানুভূতি জানানো হয়েছে।’’
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের এএফডি অনিন্দ্য গুহ ঠাকুরতা বলেন, ‘‘বুলবুলের তাণ্ডবে সুন্দরবনে আমাদের ব্যাঘ্রপ্রকল্প দফতরের অনেকগুলি নজরদারি ক্যাম্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার মধ্যে বেশ কিছু বেসরকারি রিসর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
বলে জেনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy