Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Sodepur

দখল ফুটপাত থেকে সেতুর রেলিং, অনিয়মই যেন নিয়ম সোদপুরে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশের পরে কলকাতা জুড়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নেমেছে পুলিশ ও পুরসভা। এ দিকে, সোদপুর স্টেশন রোডের মতো ব্যস্ত এলাকাও চলছে অনিয়মের নিজস্ব ছন্দে।

Sodepur

সোদপুর রেল সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গেই বাঁধা রয়েছে দোকানের প্লাস্টিকের ছাউনি। — নিজস্ব চিত্র।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৬:৪২
Share: Save:

গুমটি দোকানের মাথায় থাকা প্লাস্টিকের ছাউনির এক প্রান্ত নীচে বাঁধা। আর এক প্রান্ত উঠে গিয়েছে সেতুর রেলিং পর্যন্ত। কোথাও আবার দিনের পর দিন ‘চুরি’ হয়ে চলেছে ফুটপাত। সেখানেই গজিয়ে ওঠা দোকান ‘প্রভাবশালীদের’ মদতে ভাড়ায় খাটাচ্ছেন কেউ কেউ। এমনই নানা অভিযোগে বিদ্ধ সোদপুর স্টেশন রোড যেন গড়িয়াহাট-হাতিবাগানেরই ছোট সংস্করণ!

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশের পরে কলকাতা জুড়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নেমেছে পুলিশ ও পুরসভা। এ দিকে, সোদপুর স্টেশন রোডের মতো ব্যস্ত এলাকাও চলছে অনিয়মের নিজস্ব ছন্দে। যা দেখে বাসিন্দাদের প্রশ্ন, পানিহাটি পুরসভা থেকে মেরেকেটে পাঁচশো মিটারের মধ্যে এই বেহাল অবস্থা কি আদৌ পাল্টাবে? পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে যে, খোদ পুরপ্রধান মলয় রায় মেনে নিচ্ছেন নিয়ম ভাঙার কথা।

তাঁর দাবি, ‘‘একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এই অনিয়মে মদতও দিচ্ছে তারাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ফুটপাত দিয়ে লোকজনের হাঁটার জায়গা নেই। ফুটপাত ভরে গিয়েছে গুমটি দোকানে। পুলিশকে তৎপর হতে বলব।’’ শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিদের একাংশের কটাক্ষ, পুরপ্রধান বদলের সম্ভাবনায় যখন সেই পদ নিয়ে তরজা চলছে, তখন এ সব নিয়ে কি কারও মাথা ঘামানোর সময় আছে?

পানিহাটি পুরসভার সামনে সোদপুর ট্র্যাফিক মোড় থেকে স্টেশনের আগে পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে কয়েক বছর আগে নতুন করে ফুটপাত তৈরি করেছিল পূর্ত দফতর। ফুটপাতের সামনে গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনাও হয়েছিল। অভিযোগ, দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সব জায়গায় বসতে শুরু করে অস্থায়ী দোকান। কোথাও তিন ফুট বাই পাঁচ ফুট, কোথাও পাঁচ ফুট বাই পাঁচ ফুটের ওই সমস্ত দোকানই এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদতে পাকা হয়ে গিয়েছে। খাস পুর ভবনের গা-ঘেঁষে মাথা তুলেছে টিনের ছাউনি দেওয়া ও শাটার লাগানো দোকান।

যার ফল, ফুটপাত দৃশ্যত উধাও। পরিস্থিতি এমনই যে, দমকলের ইঞ্জিন ঢুকতেও বেগ পাবে। বেশ কয়েক বছর আগে সোদপুরের ওই রাস্তার ধারেই একটি বড় পোশাকের বিপণিতে অগ্নিকাণ্ডে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেতুর নীচের অবস্থা আরও ভয়াবহ। রেলিং ঘেঁষে উঠেছে একের পর এক দোকানের টিনের দেওয়াল। আর রেলিং থেকে টানটান করে দড়ি দিয়ে বাঁধা অসংখ্য কালো, নীল প্লাস্টিকের ছাউনি।

‘সোদপুর স্টেশন রোড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র দাস ও স্নেহাশিস ঘোষচৌধুরীর কথায়, ‘‘যেমন তেমন করে গজিয়ে ওঠা গুমটি দোকানগুলির জন্য আমাদের স্থায়ী দোকানগুলি দেখা যায় না। অথচ, ট্রেড লাইসেন্স থেকে শুরু করে সব রকম রাজস্ব আমরা সরকারকে দিয়ে যাই।’’

ব্যারাকপুর ডিভিশনের পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অস্থায়ী এই সব দোকানের জন্য বোঝারই উপায় নেই, সেতুর দেওয়ালে কোথায়, কী ক্ষতি হচ্ছে।’’ সব মিলিয়ে ‘প্রভাবশালীদের’ আধিপত্যে গয়ংগচ্ছ মনোভাবেই চলছে পানিহাটি!

অন্য বিষয়গুলি:

Sodepur Irregularities
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy