ফাইল চিত্র।
প্লাস্টিক গলে সম্প্রতি নিমতলা শ্মশানে বিকল হয়ে গিয়েছিল একটি চুল্লি। এ বার একই কারণে চুল্লি বিকল হল নৈহাটিতে। যার জেরে শুক্রবার সকাল থেকে ব্যাহত হল মৃতদেহ সৎকারের কাজ। শ্মশানে এসে জমতে শুরু করল একের পর এক দেহ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাটি কেটে দু’টি চুল্লি তৈরি করে দেহ সৎকারের কাজ করতে হয়। সন্ধ্যার পরে অবশ্য একটি চুল্লি ঠিক হয়। আর একটি এখনও বন্ধ।
চলতি মাসের শুরুতেই নৈহাটি পুরসভার সেনপাড়া শ্মশানঘাটে নতুন একটি চুল্লি চালু করা হয়েছিল। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের শ্মশানগুলিতে কোভিড-দেহ সৎকারের চাপ লাঘব করতে নতুন চুল্লি চালু হয়েছিল ভাটপাড়া ও গাড়ুলিয়াতেও। গত সপ্তাহে ভাটপাড়ার আটপুর ঘাটের চুল্লিটি সাময়িক ভাবে বিকল হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে সেটি সারানো হয় বলে জানিয়েছেন ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
নৈহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, কোভিড ছাড়া অন্য রোগে মৃত ব্যক্তিদের সৎকারের জন্য আলাদা চুল্লি রয়েছে সেনপাড়া শ্মশানে। বৃহস্পতিবার রাতে সেটি প্রথমে বিকল হয়। ফলে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হন, কোভিড দেহের জন্য নির্ধারিত চুল্লিতে সাধারণ দেহ সৎকারের কাজ শুরু করতে। কিন্তু শুক্রবার সকালে আচমকা ওই চুল্লিটির তাপমাত্রা নেমে গিয়ে সেটিও বিকল হয়ে পড়ে। এর জেরে দীর্ঘক্ষণ সৎকারের কাজ বন্ধ থাকে ওই শ্মশানে।
নৈহাটির পুর চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় জানান, দু’টি চুল্লিই বিকল হয়ে যাওয়ায় পুরসভার তরফে মাটি খুঁড়ে নতুন চুল্লি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। বেলার দিকে সেই চুল্লিতে কাঠ জ্বেলে শুরু হয় দেহ সৎকারের কাজ। অশোকবাবু বলেন, ‘‘প্লাস্টিকে মুড়িয়ে কোভিডে মৃতদের দেহ আনা হচ্ছে। চুল্লির উচ্চ তাপমাত্রায় সেই প্লাস্টিক গলে যাচ্ছে। তার জেরেই এ দিন ওই চুল্লির তাপমাত্রা নেমে আসে।’’
এই ঘটনার জেরে সকালে সেনপাড়া শ্মশানে বেশ কয়েকটি দেহের লাইন পড়ে যায়। যদিও চুল্লি বিকল হওয়ার অন্য একটি কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, শ্মশানের ডোমেরা কোভিড চুল্লিতে অনেক সময়ে একসঙ্গে দু’টি করে দেহ ঢোকাচ্ছেন। যে কারণে চুল্লিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে।
অন্য দিকে, গত এক সপ্তাহ ধরে চুল্লি বিকল হয়ে থাকায় দাহকাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে ব্যারাকপুরের রানি রাসমণি শ্মশানেও। ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস জানান, গত সপ্তাহে একটি কোভিড দেহের সৎকার করার সময়ে চুল্লিটি বিকল হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই রোগীর শরীরে পেসমেকার বসানো ছিল। সৎকারের সময়ে পেসমেকার ফেটে চুল্লির ভিতরে বিস্ফোরণ হয়। তার জেরেই এই বিপত্তি।’’
উল্লেখ্য, ব্যারাকপুরের ওই শ্মশানটি বন্ধ থাকায় চাপ বেড়েছে ভাটপাড়া, গাড়ুলিয়া ও নৈহাটি পুর এলাকার শ্মশানগুলিতে। স্থানীয় এলাকা ছাড়াও বারাসত, মধ্যমগ্রাম, কল্যাণী, সোদপুরের মতো উত্তর শহরতলির একাধিক জায়গা থেকে কোভিড-দেহ পৌঁছচ্ছে শিল্পাঞ্চলের শ্মশানগুলিতে। সাধারণত, কোভিড দেহের সৎকার হয় রাতে। কিন্তু, চাপ বাড়ায় অনেক ক্ষেত্রেই দিনের বেলাতেও কোনও কোনও শ্মশানে কোভিড দেহ সৎকারের কাজ চলছে বলে খবর।
গাড়ুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সঞ্জয় সিংহ জানান, সৎকারের চাপ বাড়ায় চুল্লিগুলি বিশ্রাম পাচ্ছে না। এই কারণেও অনেক ক্ষেত্রে চুল্লি বিকল হচ্ছে। তবে দ্রুত সেগুলি ঠিক করে নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy