বিক্ষোভ সিপিএমের। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র
করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল এবং ব্যারাকপুরের কোভিড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই মারা গিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
বনগাঁ শহরের বাসিন্দা বছর আটান্নর ওই ব্যক্তি শুক্রবার রাতে বারাসত কোভিড হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী-সহ পরিবারের তিন সদস্য এখন নিউটাউনে কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তাঁর মৃত্যুর ঘটনার গাফিলতির অভিযোগ তুলে রবিবার ডিওয়াইএফ-এর পক্ষ থেকে বনগাঁ শহরে প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়। সংগঠনের বনগাঁ শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রসূন দাস বলেন, ‘‘বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে পর পর দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল (গত শনিবার এক বৃদ্ধের মৃত্যুতেও গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের বিরুদ্ধে)। দু’টি মৃত্যুর ঘটনার আমরা সঠিক তদন্ত চাই।’’ হাসপাতাল সুপারের অপসারণের দাবিও তুলছেন তাঁরা।
মৃতের পরিবারের সদস্যদেরও একই দাবি। রবিবার পরিবারের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে মেল করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ জুলাই বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই ব্যক্তিকে। উপসর্গ বলতে ছিল সামান্য জ্বর। আর কোনও রোগ ছিল না। হাসপাতালে ভর্তির পরে সামান্য শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। পরিবারের দাবি, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করার পরে হাসপাতাল সুপারকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছিল, যেন লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। সুপার কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। আরও কিছু পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ আছে তাঁদের।
বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তির লালারস অবশ্য নেওয়া হয়। ২৩ জুলাই রাতে ব্যারাকপুরের কোভিড হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মৃতের ভাই বলেন, ‘‘ব্যারাকপুর কোভিড হাসপাতাল থেকে দাদা ফোন করে জানিয়েছিলেন, তাঁকে ঠিক মতো অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে না। কিছুক্ষণ দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ওখানে দাদাকে ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হয়নি।’’
২৭ জুলাই ওই ব্যক্তিকে বারাসত কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শুক্রবার রাতে তিনি মারা গিয়েছেন। মৃতের ভাই বলেন, ‘‘বারাসত কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছেন, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে দাদাকে ইনহেলার দেওয়ার ফলে রক্ত জমে গিয়েছিল। বনগাঁ ও ব্যারাকপুর হাসপাতালের গাফিলতির কারণেই দাদার মৃত্যু হয়েছে।’’
পুরপ্রশাসক শঙ্কর বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির মৃত্যু দুঃখজনক ঘটনা। পরিবারের পক্ষ থেকে বনগাঁ হাসপাতালের গাফিলতির বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন, আপনারা অভিযোগ খতিয়ে দেখুন।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘ঘটনাটি এখন ঠিক মনে পড়ছে না। খোঁজ-খবর নিয়ে বলতে পারব।’’ এ বিষয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy