ভোলানাথ মণ্ডল।
পারিবারিক অশান্তির জেরে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং মেজো মেয়েকে দায়ের কোপ মেরেছিলেন এক পেয়ারা ব্যবসায়ী। সেই ঘটনার পরের দিন রাতে নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল ওই ব্যক্তির দেহ। তাঁর বাঁ হাতের শিরাও কাটা ছিল। শনিবার রাতে, বারুইপুর থানার মদারহাট এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ভোলানাথ মণ্ডল (৪৮)। তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের। তাঁর মা এবং স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোলানাথ পেয়ারার ব্যবসা করতেন। কিন্তু লকডাউনের সময়ে সেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে তিনি জমি বিক্রির দালালি শুরু করলেও তাতে বিশেষ আয় হচ্ছিল না। কিন্তু প্রতিদিনই মদ-গাঁজার নেশা করতেন ভোলানাথ। এ নিয়ে পরিবারে নিত্য অশান্তি লেগেই ছিল। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কোনও কারণে পরিবারে ফের অশান্তি শুরু হলে মত্ত অবস্থায় বৃদ্ধা মা গীতা এবং স্ত্রী ঊর্মিলা মণ্ডলকে দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করেন ভোলানাথ। সে সময়ে তাঁর মেজো মেয়ে বাঁচাতে এলে সে-ও আক্রান্ত হয়। ঘটনার সময়ে ভোলানাথের আরও দুই মেয়ে বাড়িতে ছিল না। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তিন জনকে উদ্ধার করে প্রথমে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে কলকাতায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, আহত মেয়েটির আঙুলে চোট ছিল। তাকে রবিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি দু’জনের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক চোট রয়েছে। তাঁরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
এ দিকে, ওই ঘটনার পরে বাড়ি থেকে খুব একটা বেরোচ্ছিলেন না ভোলানাথ। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সম্ভবত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। এর পরে শনিবার গভীর রাতে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে।
ভোলানাথের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘সব সময়ে মাথা গরম করে থাকত। সংসারে টাকা-পয়সা নিয়ে অশান্তি ছিল। শুক্রবারের ঘটনার পর থেকেই কেমন যেন হয়ে গিয়েছিল।’’
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, অনুশোচনা থেকেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ভোলানাথ। বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy