Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Government bus

৮০টি দূরপাল্লার বাসের মধ্যে অকেজো ৫৮টি, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে ধর্মতলা থেকে নামখানা, বকখালি, কাকদ্বীপ, রামগঙ্গা, পাথরপ্রতিমা, ঢোলাহাট, বুড়ুল পর্যন্ত সরকারি ভূতল পরিবহণ নিগমের বাস চলাচল করে।

সারিবদ্ধ: দাঁড়িয়ে আছে অকোজো বাস। উস্তি ডিপোতে। নিজস্ব চিত্র

সারিবদ্ধ: দাঁড়িয়ে আছে অকোজো বাস। উস্তি ডিপোতে। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১০:০০
Share: Save:

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, রামগঙ্গার মতো প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ পরিবহণের জন্য মূলত সরকারি ভূতল পরিবহণ দফতরের বাসের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু প্রায় দেড় মাস ধরে একের পর এক বাস অকেজো হয়ে ডিপোয় পড়ে থাকায় রাস্তায় বাসের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। আগে যেখানে ১৫-২০ মিনিট অন্তর বাস মিলত, সেখানে ১-২ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস মিলছে না। ফলে, ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে ধর্মতলা থেকে নামখানা, বকখালি, কাকদ্বীপ, রামগঙ্গা, পাথরপ্রতিমা, ঢোলাহাট, বুড়ুল পর্যন্ত সরকারি ভূতল পরিবহণ নিগমের বাস চলাচল করে। এই সমস্ত এলাকায় দূরপাল্লার সরকারি বাসই পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম। যাত্রীদের দাবি, বেসরকারি বাস কিছু থাকলেও সেগুলি যাত্রী নেওয়ার জন্য থেমে থেমে ধীর গতিতে চলে। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছনো যায় না। বিশেষত অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজের কর্মীরা সরকারি বাসেই মূলত যাতায়াত করেন। সম্প্রতি ওই সমস্ত রাস্তায় বাস অনেক কমে যাওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে বেসরকারি বাসে বা ছোট গাড়িতে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছেন তাঁরা।

কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?

ভূতল পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বাস চলাচল করে হাওড়া এবং উস্তি ডিপো ও টার্মিনাস থেকে বিভিন্ন রুটে। আগে মোট বাসের সংখ্যা ছিল ৮০টি। বর্তমানে তা কমতে কমতে ২২টি বাসে এসে ঠেকেছে। বাকি ৫৮টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে ডিপোতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবহণ দফতরের এক কর্মী জানান, পরিবহণ দফতর মূলত ভর্তুকিতেই চলে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত সরকার অর্থ সাহায্য করত। বর্তমানে সেই সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। পুরনো বাসের যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে গেলে সারাতে যথেষ্ট খরচ হয়। এক এক করে বাস খারাপ হলেও তা সারানোর টাকা দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। ফলে টার্মিনাসে ক্রমশ খারাপ বাসের সংখ্যা বাড়ছে। বসে থেকে থেকেও একেবারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অনেক বাস। তিনি আরও জানান, টার্মিনাসে সার দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা বাসের গায়ে ‘খারাপ বাস’ লিখে রেখেছেন কর্মীরা। না হলে যাত্রীদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।

এক বাস কন্ডাক্টর বলেন, ‘‘রাস্তায় বাসের সংখ্যা অর্ধেকের চেয়েও কমে গিয়েছে। ফলে গাদাগাদি করে যাত্রীরা যাচ্ছেন। রোজই এ নিয়ে বাসে খিটিমিটি লেগে থাকে। বাস না বাড়ালে এই সমস্যা মিটবে না।’’

ডায়মন্ড হারবার এলাকার বাসিন্দা সুবীর দাস পাথরপ্রতিমা ব্লকের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তিনি বলেন, ‘‘ বর্তমানে ভূতল পরিবহণ নিগমের বাস অনিয়মিত হয়ে পড়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। বেসরকারি বাসে গেলে সময় অনেক বেশি লাগে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ওই এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা ছাড়া উপায় দেখছি না।’’ তিনি আর বলেন, ‘‘অনেকেই সরকারি বাসে বেহালার ঠাকুরপুকুর, ধর্মতলা, হাওড়া থেকে কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগর, পাথরপ্রতিমাতে কর্মস্থলে যান। তাঁরা সকলেই সমস্যায় পড়েছেন। অবিলম্বে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা হোক।’’

উস্তির বাস টার্মিনাসের এক আধিকারিক সৈয়দ বেদানুল বলেন, ‘‘বাসের সংখ্যা কমে যাওয়ায় যাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছেন। দ্রুত বাসগুলি সারিয়ে পরিষেবা চালু করা হবে। এই বিষয়ে স্থানীয় মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’

এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারি বলেন, ‘‘বিষয়টা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Government bus Diamond Harbour
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy