Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
sand mafia

বাঁধের ভাঙন নিয়ে আশঙ্কার মধ্যেই চলছে মাটি চুরি

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ ভাবে নদীর ভিতর বাঁধের পাশ থেকে পলি-বালি ও মাটি সরানোর ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে। বাড়ছে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা। নদীর স্বাভাবিক গতিপথও ব্যহত হচ্ছে।

অবৈধ: দিনে-দুপুরে যন্ত্রের সাহায্যে এ ভাবেই কাটা হচ্ছে মাটি। নিজস্ব চিত্র

অবৈধ: দিনে-দুপুরে যন্ত্রের সাহায্যে এ ভাবেই কাটা হচ্ছে মাটি। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৭
Share: Save:

সুন্দরবন এলাকায় নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি, পলি কেটে নেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। মাটি কাটা রুখতে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন কিছু পদক্ষেপও করেছে। পুলিশের দাবি, এ ধরনের অভিযোগ পেলেই ধরপাকড় করা হয়। সাম্প্রতিক অতীতে সন্দেশখালি, মিনাখাঁ-সহ বিভিন্ন জায়গায় নদী থেকে বালি-পলি তোলার সময়ে পুলিশের নজরে পড়ে গ্রেফতার হয়েছে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কিন্তু তাতেও মাটি কাটা রোখা যায়নি। বরং পুলিশের নজর এড়াতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাটি মাফিয়ারা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মাটি চুরির জন্য প্রথমে বাঁধের ধারে তৈরি করা হচ্ছে বড় বড় পুকুর। এরপর নৌকোর উপর বসানো শক্তিশালী যন্ত্র ও পাইপের সাহায্যে নদীর জল ওই পুকুরে ফেলে পলি-বালি জমানো হচ্ছে। পরে উপর থেকে জল সরিয়ে ফেলে ফের নদীর জল ভরা হচ্ছে পুকুরে। এ ভাবে ক্রমশ পলি-বালির স্তর বাড়তে থাকে। বেশ কিছুটা পলি জমার পরে তা যন্ত্র দিয়ে পাইপের সাহায্যে সরাসরি গাড়িতে তুলে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেঅসাধু ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি এই পদ্ধতিতে সন্দেশখালি, মিনাখাঁ-সহ আশেপাশের একাধিক এলাকায় রমরমিয়ে চলছে অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এতদিন মাটি চুরি চলত কোদাল-ঝুড়ি নিয়ে। এ কাজে লোকজন ও সময় দুই-ই বেশি লাগে। এ ভাবে চুরির সময় পুলিশি ধরপাকড়ও হয়েছে বহুবার। পুলিশের নজর এড়াতে এই পদ্ধতিকে কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। কারণ, প্রথমত অনেক ক্ষেত্রে পুকুর কাটা হয় বাঁধের ধার ঘেঁষে। বাঁধের উপর সাধারণত ম্যানগ্রোভের জঙ্গল থাকে। ফলে, সহজে সেই পুকুর চোখে পড়ে না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে জনবসতি থেকে দূরে জঙ্গলের মধ্যে এই পদ্ধতিতে মাটি চুরি করা হচ্ছে। তা ছাড়া এই চুরি হয় ধাপে ধাপে। ধীরে ধীরে পুকুরে জল ফেলে পলি জমানো হয়। পরে তা তোলা হয় যন্ত্রের সাহায্যে পাইপ দিয়ে। এ কাজে দু’তিনজন থাকলেই চলে। এ ভাবে চুরির ক্ষেত্রে ধরা পড়ার সুযোগ কম।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ ভাবে নদীর ভিতর বাঁধের পাশ থেকে পলি-বালি ও মাটি সরানোর ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে। বাড়ছে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা। নদীর স্বাভাবিক গতিপথও ব্যহত হচ্ছে। আরও অভিযোগ, প্রতিবাদ জানাতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা।অথচ প্রশাসন এ বিষয়ে নির্বিকার। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে পলি চুরি বন্ধ না হলে বাঁধের ভাঙন রোখা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপেশচন্দ্র পাত্র বলেন, ‘‘খোঁজখবর নিয়ে দেখছি কোথায় কোথায় এই ধরনেরব্যবসা চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশ ও সেচ দফতরকে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়াহবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

sand mafia Sundarbans Basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy